জ্ঞানবাপী মসজিদের বেজমেন্টে পূজার অনুমতি হাইকোর্টে বহাল
ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে অবস্থিত জ্ঞানবাপী মসজিদের বেজমেন্টে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে রাজ্যটির এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
এতে করে মসজিদের বেজমেন্টে পূজা চালিয়ে যেতে পারবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট আজ জ্ঞানবাপী মসজিদের সেলারে হিন্দুদের পূজার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে বারানসি জেলা আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে।
বারানসি জেলা আদালত গত মাসে রায় দিয়েছিল, জ্ঞানবাপী মসজিদের দক্ষিণ সেলারে একজন পুরোহিত পূজা করতে পারেন। তবে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করে আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি।
দুই দফা শুনানির পর সোমবার হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
জ্ঞানবাপী মসজিদটির বেজমেন্টে চারটি সেলার রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি সেলার পুরোহিতদের একটি পরিবারের দখলে ছিল। তারা সেখানে বাস করত। সোমনাথ ব্যাস নামে ব্যাস পরিবারের একজন সদস্য ১৯৯৩ সালে এটি বন্ধ করে দেওয়ার আগে সেলারে পূজা করেছিলেন।
সেই পরিবারের সদস্য শৈলেন্দ্র পাঠক আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন, বংশগত পুরোহিত হিসাবে তাদের এই কাঠামোতে প্রবেশ করতে এবং সেখানে পূজা করার অনুমতি দেওয়া উচিত। মূলত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরপরই উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের নির্দেশে ৩০ বছর আগে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
তবে গত ৩১ জানুয়ারি জ্ঞানবাপী মসজিদের নিচে ব্যাসজীর ভূগর্ভস্থ কক্ষ বলে পরিচিত স্থানে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দিয়ে বারানসির জেলা আদালত জানায়, প্রশাসনকে এক সপ্তাহের মধ্যে সেখানে পূজার বন্দোবস্ত করতে হবে। কিন্তু নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গভীর রাতে সেখানে পূজা শুরু করার সব ব্যবস্থা করা হয়।
পরে মসজিদের দক্ষিণ দিকের অংশ হিন্দু ভক্তদের জন্য খুলেও দেওয়া হয়। এর পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেই ‘ব্যাস কা তেখানায়’ গিয়ে পূজা করেন।
এরপর গত ৩১ জানুয়ারির রায়ের পরই সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মসজিদ কমিটি। শীর্ষ আদালত আবেদন শুনতে না চেয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে যেতে বলে। এর দু’ঘণ্টার মধ্যে আবেদন জমা পড়ে হাইকোর্টে। সেই আবেদনই সোমবার খারিজ করে দেওয়া হলো।
এর আগে, ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) মসজিদটিতে আদালতের নির্দেশ জরিপ পরিচালনা করে। পরে সেখানে হিন্দু দেবতার মূর্তির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে বলে জানায় এএসআই।
দেশটির এই জরিপসংস্থার প্রতিবেদনে মসজিদটির কাঠামোর কিছু অংশে মন্দিরের স্তম্ভ ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়।