৭ নভেম্বর ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ। তার মাত্র পাঁচ দিন আগে, রাজ্যে ৫ কোটি টাকার নগদ বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই অর্থ এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী খরচের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে এই অর্থ পাঠিয়েছিল মহাদেব বেটিং অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতারা। বর্তমানে এই বেটিং অ্যাপের বিরুদ্ধে বড়সড় দুর্নীতির মামলার তদন্ত করছে ইডি। নাম জড়িয়েছে একের পর এক বলিউড তারকাদের। এবার ভারতে নির্বাচন প্রভাবিত করার জন্য অর্থ প্রদানের অভিযোগ উঠল এই বেটিং অ্যাপ সংস্থার বিরুদ্ধে।
নগদ বাজেয়াপ্ত প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার ইডির এক কর্তা বলেছেন, “এক গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইডি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে মহাদেব অ্যাপের প্রবর্তকদের পাঠানো এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। কুরিয়ার হিসাবে কাজ করছিল সে। রায়পুরের এক হোটেলে থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। সেই সময় তার গাড়ি থেকে তার কাছে নগদ ৩.১২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ভিলাইয়ে তার এক গোপন আস্তানা থেকে আরও নগদ ১.৮ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে।” ওই কর্তা আরও জানিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে ছত্তীসগঢ়ে বিপুল পরিমাণ নগদ পাঠাচ্ছে এই বেটিং অ্যাপের প্রবর্তকরা। এর সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকটি বেনামি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা টাকার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি! এই অর্থ সরবরাহের পিছনে একাংশের সরকারি কর্মচারীদের ভূমিকা থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে, মহাদেব বেটিং অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত ৩৯টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ৪১৭ কোটি টাকার সোনার বার, গয়না এবং নগদ উদ্ধার করেছিল ইডি। অ্যাপটির প্রবর্তক, সৌরভ চন্দ্রকর এবং রবি উৎপল বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে থাকে। কিন্তু, তারা দুজনেই আদতে ছত্তীসগঢ়ের ভিলাইয়ের বাসিন্দা। ইতিমধ্য়েই, এই অ্যাপটির সঙ্গে জড়িত আর্থিক দুর্নীতির মামলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির সন্দেহ, এর সঙ্গে একাংশের পুলিশ কর্মী, রাজনীতিবিদ এবং সরকারি আমলারাও জড়িত আছেন।
রণবীর কাপুর, শ্রদ্ধা কাপুর, কপিল শর্মার মতো বলিউড সেলিব্রিটিদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে সৌরভ চন্দ্রকারের বিয়ে ছিল। ২০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল সেই বিয়েতে। সেখানে বেশ কয়েকজন বলি তারকা পারফর্ম করেছিলেন। এর জন্য তাদের অর্থ প্রদান করা হয়েছিল হাওয়ালা লেনদেনের মাধ্যমে বলে দাবি ইডির। সেই মামলার তদন্তের মধ্যেই, এবার নির্বাচনে বেআইনি অর্থ প্রদানের অভিযোগও উঠল মহাদেব অ্যাপের বিরুদ্ধে।