শখের মোটরসাইকেলেই প্রাণ গেল জিসানের
গত বছর এস.এস.সি পরী’ক্ষায় অ’কৃত’কার্য হয় জুলফিকার ইসলাম ওরফে জিসান (১৬)। এর কিছুদিন পর সে মা জলি বেগমের কাছে মোটর’সাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য বায়না ধরে। প্রথমে রাজি হন’নি মা। এক পর্যায়ে ছে’লে’র যন্ত্র’ণায় বাধ্য হয়ে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন। সেই মোটর’সাইকেল দু’র্ঘ’ট’নায় প্রা’ণ গেল জু’ল’ফিকার ইসলামের।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সাদুল্লা এলাকায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অপর একটি মোটর’সাইকেলের সঙ্গে মুখো’মুখি সংঘর্ষে জুলফিকারসহ দু’জন নি’হত হন।
নিহত জুলফিকার ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার ভূঁইয়াপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। সে ওই মহল্লার আবুল ইসলাম খানের ছেলে। বছরখানেক আগে আবুল ইসলাম খান মারা যান।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পু’লি’শ জানায়, জুলফিকার ইসলাম শুক্র’বার জু’মার নামাজ পড়ার জন্য মোটর’সাইকেলে করে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সাদুল্লা এলাকায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে জুলফিকারের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে দুটি মোটরসাইকেল দুমড়েমুচড়ে যায়। জুলফিকার ইসলাম ও অপর মোটরসাইকেলের অজ্ঞাতনামা এক আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত আরও দু’জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নান্দাইল হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো: খোরশেদ আলম বলেন, দুর্ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন। তবে ঘটনাস্থল তার থানার আওতাধীন নয়।
ভূঁইয়াপাড়া মহল্লায় গিয়ে দেখা যায়, নিহত জুলফিকারের লাশ একটি খাটিয়ায় করে বাড়ির উঠোনে রাখা হয়েছে। শেষবারের মতো লাশ দেখতে আসছেন মহল্লার লোকজন। এ সময় বাড়ির ভেতর থেকে মা জলি বেগম চি’ৎকার করতে করতে ছেলের লাশের কাছে ছুটে আসেন। এরপর বিলাপ করতে করতে মূর্ছা যান তিনি। পরে তাকে ধরাধারি করে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত কিশোরের চাচাতো ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, জুলফিকার তার মাকে এক প্রকার বাধ্য করে মোটরসাইকেল কেনার টাকা আদায় করে। তার পছন্দের মোটরসাইকল নান্দাইলে পাওয়া যায়নি। পরে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর বাজারের শোরুম থেকে টিভিএস অ্যাপাচি ফোর বি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কেনে সে।
মহল্লার এক’জন বা’সিন্দা বলেন, কয়েক দিন আগে জুলফিকারকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে মোটর’সাইকেল নিয়ে তীব্র গতিতে একটি কাভার্ড ভ্যানকে পাশ কাটাতে দেখেছেন তিনি। আরেকটু হলেই সে মোটর’সাইকেলসহ চাকার কাভার্ড ভ্যানের নিচে চলে যাচ্ছিল।





