ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ, নির্বাচন অংশ নিতে পারবেন মান্না
ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম অবিলম্বে বাদ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। এ আদেশের ফলে বগুড়া থেকে নির্বাচন করতে তার আর বাধা নেই।
ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটানোর জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন মান্না। হাই কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করায় তার ভোটের পথ আটকে যায়।
সেই আদেশের বিরুদ্ধে মান্না আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ঋণ পুনঃতফসিল করে সিআইবির তালিকা থেকে নাম কাটানোর আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী।
সে আবেদন শুনে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক রোববার হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সিআইবির তালিকায় মান্নার নামও স্থগিত করা হয়েছে।
এর ফলে মান্নার নির্বাচন করতে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
মান্নার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, মামুন মাহবুব।
আহসানুল করিম বলেন, “ব্যাংক লোন রিশিডিউল হয়েছে। নির্বাচনে বাধা নেই।”
বিচারক ইসলামি ব্যাংকের আইনজীবীকে বলেন, “লোন তো রিরশিডিউল হয়েছে। আমার-আপনার তো করার কিছু নেই। এখন যা করার নির্বাচন কমিশন করবে; স্টে।”
ইসলামী ব্যাংকের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “আজকে অনারেবল জাজ ইন চেম্বারে উনার পক্ষ থেকে উনারা যে আবেদনটা করেছিল, সেখানে উনারা এক দরখাস্ত দিয়েছিল- যাতে উনার যে সিআইবিটা আছে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বাংলাদেশ ব্যাংকের, যেখানে খেলাপিদের তালিকা থাকে। সেই তালিকায় যারা থাকেন, আপনারা জানেন- তারা নির্বাচন করতে পারেন না।
“তো মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের অনারেবল জাজ ইন চেম্বার আজকে সেই সিআইবিটাকে উনার স্টে করেছেন। তার মাধ্যমে উনার আপাতত এই সিআইবিতে স্টে হয়ে যাওয়ার কারণে নির্বাচনে কোনো বাধা থাকার কথা না।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা উনার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোম্পানি যেটা ছিল, সেটার আরকি লোনের কারণে এটা কল অফ করা হয়েছিল। লোনটা ক্লাসিফাইড হয়ে গিয়েছিলেন। তো পরবর্তীতে এটাকে পুনরায় তফসিল করা হয়েছে এবং পুনরায় এটা এখন এই মুহূর্তে এটা রেগুলারাইজড অবস্থা চলে আসছে—উনার আবেদনের প্রেক্ষিতে।
“যার ফলশ্রুতিতে এই মুহূর্তে ইসলামী ব্যাংকের সাথে উনাকে আর খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে আমরা নির্দিষ্ট করছি না।”
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর মান্নার প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে নোটিস পাঠায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বগুড়া বড়গোলা শাখা। মান্না ও তার দুই অংশীদারের ঠিকানায় পাঠানো এই নোটিসে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করতে বলা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী। এ প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ রয়েছে মান্নার, ২৫ শতাংশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর এবং বাকি ২৫ শতাংশ শাজাহান চৌধুরীর স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর।
ব্যাংকের নোটিসে বলা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ করেনি। ফলে বকেয়া বেড়ে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়ায়।




