দেশকে অস্থির করতে পেছন থেকে কাজ করছে কিছুসংখ্যক লোক: মির্জা ফখরুল
দেশ এখন এক ক্রান্তিকাল পার করছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিভিন্ন রকম কথা উঠছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে, আন্দোলন হচ্ছে। কেন যেন মনে হয়, দেশকে অস্থির করে তোলার জন্য কিছুসংখ্যক লোক পেছন থেকে কাজ করছে।’
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের মানবকল্যাণ পরিষদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
দেশ যাতে আবার অন্ধকারের দিকে চলে না যায়, সে জন্য সবাইকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভুল করে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি করলে আমরা আবার সেই সব চক্রান্তকারীর হাতে পড়ব। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব।’
আসন্ন নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা যেন কেউ করতে না পারে, সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
আলেম–ওলামাদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে এটা ছড়িয়েছে, আমরা নাকি কোরআন ও সুন্নাহর আইন চাই না। নাউজুবিল্লাহ। আমরা সব সময় কোরআন ও সুন্নাহর মধ্যেই থাকতে চাই। আমরা কমিটেড, অঙ্গীকারবদ্ধ। এই দেশে আমরা কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন করতে দেব না। এটা আমাদের কমিটমেন্ট। এই কমিটমেন্ট আমরা সব সময় করে এসেছি।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই নির্বাচনে আপনারা নির্ধারণ করবেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই দেশ কারা পরিচালনা করবে। তাই এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ১৫ বছর দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে তারা (আওয়ামী লীগ) ধ্বংস করে দিয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। শুধু কিছুসংখ্যক ব্যক্তিকে ধনী করার জন্য তারা ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে। সামগ্রিকভাবে গোটা দেশের মানুষকে তারা বঞ্চিত করেছে।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতা পেয়ে চিরস্থায়ী করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্যাতন–নিপীড়ন করেছে। আলেম–ওলামাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি তাঁদের ফাঁসি দিয়ে শহীদ করা হয়েছে। সেই সময় আপনারা কেউ নিরাপদে ছিলেন না। রাস্তাঘাটে আপনারা ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেননি। আপনারা সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতেন, কখন আপনাদের জঙ্গি বলে ধরে নিয়ে যায়।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্কে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আমাদের ধর্মবোধ, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি রক্ষা করার জন্য আমরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।’
সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ জেলার আলেম–ওলামা, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও বিএনপির স্থানীয় নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




