ফুটবল নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে আসিফ আকবর
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আলোচনায় আছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর। সম্প্রতি বিসিবির একটি বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন, যেখানে ফুটবল ও ক্রিকেট নিয়ে দেওয়া তার মন্তব্য দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিনেই ফুটবল ও ফুটবলারদের নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য রাখেন আসিফ। তিনি বলেন, “ফুটবলারদের কারণে গোটা দেশে ক্রিকেট খেলা যাচ্ছে না। তারা উইকেট ভেঙে ফেলে এবং প্রতিটি জেলার স্টেডিয়াম দখল করে রেখেছে। এমনকি যেখানে ফুটবলের আয়োজন নেই, সেখানেও তারা স্টেডিয়াম ব্যবহার করছে।”
এই বক্তব্যের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। অনেক ক্রীড়াবিদ, কোচ ও সংগঠক বিষয়টিকে ক্রীড়াজগতকে বিভাজিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সদস্য গোলাম গাউস বলেন, “আসিফ তো ক্রীড়াঙ্গনের মানুষই নন। তিনি এমন একটি মন্তব্য করেছেন, যা কোনোভাবেই শালীন নয়। এতে ফুটবলের কিছু যায় আসে না, তবে বক্তব্যের ভদ্রতা থাকা উচিত।”
বাফুফে সদস্য কামরুল হাসান হিলটন তার ফেসবুকে লিখেছেন, “প্রকৃত ক্রীড়া সংগঠক খেলাধুলার মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। কিন্তু বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবরের মন্তব্য খেলাধুলার অঙ্গনকে বিভাজিত করবে। ক্রিকেট যদি আভিজাত্যের খেলা হয়, তাহলে ফুটবল কী নিম্নজাতের খেলা? এমন দৃষ্টিভঙ্গি ঘৃণ্য।”
জাতীয় দলের সাবেক কোচ মারুফুল হকও তার ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যের জন্য। সরাসরি কাউকে প্রতিপক্ষ বানালে আমরাও প্রস্তুত প্রতিপক্ষ হতে।”
আরেক কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু লিখেছেন, “যার যেখানে থাকা উচিত না, এই দেশে সে সেখানেই বসে। ভাষা ঠিক করুন।”
তারকা গোলকিপার বিপ্লব ভট্টাচার্যও বলেন, “আসিফ আকবর সারা দেশের ফুটবলারদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
এদিকে আসিফ আকবরের বক্তব্যের সময় বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় তালি দিতে দেখা গেছে, যা নিয়ে আরও আলোচনা তৈরি হয়েছে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে ইস্ট অ্যান্ড-ভিক্টোরিয়ার হয়ে ফুটবল খেলা বুলবুল এখন বিসিবির শীর্ষপদে রয়েছেন। তাই এই ঘটনায় তার অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
ঘটনাটি এখন শুধু ক্রিকেট বা ফুটবল নয়, বরং গোটা ক্রীড়া অঙ্গনে একটি সংবেদনশীল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অনেকেই বলছেন, একজন জনপ্রিয় শিল্পীর কাছ থেকে আরও সংযত ও ঐক্যবদ্ধকরণমূলক বক্তব্য প্রত্যাশা করেছিল দেশ।




