রাশিয়া থেকে তেল কিনলে পড়তে হবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায়, ট্রাম্পের হুমকি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে নতুন করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে রাশিয়া থেকে যারা তেল আমদানি করবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৪ জুলাই) হোয়াইট হাউসে ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে তিনি ‘খুব হতাশ’। ইউক্রেনকে সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে “বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র” দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা সর্বাধুনিক অস্ত্র তৈরি করব এবং সেগুলো ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর কাছে সরবরাহ করা হবে। তবে এই অস্ত্রের ব্যয়ভার তাদেরকেই বহন করতে হবে।”
এই অস্ত্রের মধ্যে থাকবে ইউক্রেনের বহুদিনের চাওয়া প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র কয়েক দিনের মধ্যেই পাঠানো হবে বলেও জানান ট্রাম্প। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের মজুদে থাকা প্যাট্রিয়ট সিস্টেমও ইউক্রেনে পাঠানোর কথা বলেন তিনি। পরে এসব দেশ সেই ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন চালান পাবে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য দেশের অর্ডার দেয়া ১৭টি প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের কিছু বা সবগুলোই ‘খুব দ্রুত’ ইউক্রেনে পাঠানো হতে পারে।
ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে বলেন, ইউক্রেনকে সামরিকভাবে সহযোগিতার জন্য জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও কানাডা প্রস্তুত রয়েছে।
ট্রাম্প জানান, রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকারক দেশগুলোর বিরুদ্ধে সেকেন্ডারি স্যাংশন (প্যারালাল নিষেধাজ্ঞা) আরোপ করা হবে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আগে ৫০ দিনের একটি গ্রেস পিরিয়ড বা সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে কোনও চুক্তি না হলে, রুশ পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
ট্রাম্পের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে রুশ বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে রুবলের দরপতন থেমে গেছে এবং শেয়ার বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রুশ পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি, সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের প্রস্তুতিও রয়েছে। ফলে যারা রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করবে, তাদের ওপরও এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে।
মার্কিন সিনেটের ১০০ সদস্যের মধ্যে ৮৫ জন একটি বিলের সহ-প্রস্তাবক হয়েছেন, যাতে ট্রাম্পকে যেকোনো দেশের ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দেওয়া হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে, এটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞানীতিতে এক বড় পরিবর্তন হয়ে উঠতে পারে। কারণ তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক সীমিত করলেও, তেল রপ্তানি থামানোর মতো কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে মস্কো চীন ও ভারতের মতো বড় বাজার থেকে বিপুল আয় করছে।