প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে কৌশলি হতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে কৌশলি হতে হবে। একইসাথে, সীমান্ত দিয়ে যেনো বাংলাদেশের কোনো অপরাধী বা সন্ত্রাসী পালাতে না পারে সে ব্যাপারে আরো সতর্ক থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে, বিজিবি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পিলখানায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সকালে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস : কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক প্রদান এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সীমান্তে মাদকের বিরুদ্ধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সব সময় সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মাদক ও চোরাচালানে সহযোগিতা করলে কোনো কর্মকর্তাকে ছাড়া দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে কৌশলি হতে হবে। সীমান্তে চোরাকারবারিদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সীমান্ত দিয়ে যাতে বাংলাদেশের কোনো অপরাধী বা সন্ত্রাসী পালাতে না পারে সে ব্যাপারো আরো সতর্ক থাকতে হবে। সীমান্তের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, ডিসিপ্লিন, ট্রেনিং অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সাইড বাই সাইড চলতে হবে। ট্রেনিং বা ডিসিপ্লিনের ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। শুধু নিজের ওয়েলফেয়ারের দিকে খেয়াল রাখলে চলবে না, আন্ডার কমান্ডের ওয়েলফেয়ারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের সমস্যা শুনতে হবে, দ্রুত সম্ভব সমাধান করতে হবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, ‘চেইন অব কমান্ড’-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও আনুগত্য বজায় রাখবেন। সীমান্ত রক্ষার পবিত্র দায়িত্বের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার যেকোনো দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করবেন।
বিজিবি বাহিনীর উদ্দেশে সীমান্তের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন উৎসবমুখর করা বিজিবির বড় দায়িত্ব। বিজিবি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি দিন নেই। যথাসম্ভব ৪৫ দিন আছে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে প্রশিক্ষণসহ যত ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয় তা গ্রহণ করতে হবে বিজিবিকে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার বড় দায়িত্ব কিন্তু বিজিবিকে নিতে হবে। এই দায়িত্ব আপনারা (বিজিবি) খুব ভালোভাবে পালন করবেন। জাতিকে একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবেন তারা, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিজিবি এক সুদীর্ঘ ও গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। আজকের বিজিবি এক ‘ত্রিমাত্রিক’ বাহিনী হিসেবে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা ও জনকল্যাণমূলক কাজে অনন্য ভূমিকা রাখছে। বিজিবির উন্নয়নে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে বিজিবি তার গৌরবময় অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ অন্য কর্মকর্তা ও বিজিবি সদস্যরা।




