হাদির ওপর গুলির ঘটনায় সিইসি: আমার মাথার ওপর বাজ পড়েছে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন।
বৈঠকের শুরুতে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমার কাছে মনে হয়েছে আমার মাথার ওপর বাজ পড়েছে। আমি আগের দিন তফসিল ঘোষণা করলাম, আর পরের দিনই এমন ঘটনা ঘটল। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পরপরই এ ধরনের সহিংস ঘটনা নির্বাচনকালীন পরিবেশ নিয়ে জনমনে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। নির্বাচন কমিশন বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা জানতে চান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো হয়েছে।
হাদির ওপর গুলির ঘটনা কি প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ভীতি তৈরি হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘যারা এই কাজ করতে চাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যই ছিল একটা ভীতির পরিবেশ তৈরি করা। এই ভয়কে মোকাবিলা করতেই নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে এবং ‘এটা সাকসেসফুল হতে দেওয়া হবে না।’
নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনার প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর যেকোনো ঘটনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি অস্বাভাবিক নয়। স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নির্বাচনী পরিবেশে প্রভাব ফেলে—এ বিষয়টি কমিশন আমলে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ডেফিনিটলি সন্তুষ্ট বলেই সময়মতো তফসিল ঘোষণা করেছি।’
নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। নির্বাচন সময়মতোই হবে। নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টির যেকোনো চেষ্টার বিষয়ে কমিশন ও সরকার উভয়ই অবহিত এবং সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, ‘ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ সমন্বিতভাবে চলবে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার এবং সংশ্লিষ্ট সব বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সীমান্ত অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সাম্প্রতিক প্রবণতার দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে বলে জানান ইসি সদস্য। এসব ঘটনার সঙ্গে বৃহত্তর কোনো নাশকতার সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।





