বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় যুগান্তকারী দুটি অধ্যাদেশ পাস
ঢাকায় তেজগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দেশের বন, জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত দুটি যুগান্তকারী অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুমোদিত অধ্যাদেশ দুটি হলো—‘বন ও বৃক্ষ সংরক্ষণ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) অধ্যাদেশ, ২০২৫’।
বন সংরক্ষণে প্রায় ১০০ বছর ধরে কার্যকর Forest Act, 1927 বর্তমান বাস্তবতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অপর্যাপ্ত। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়নের চাপ, অবৈধ দখল ও বনভূমি উচ্ছেদ মোকাবিলায় নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে প্রাকৃতিক বন রক্ষা, বনভূমির রেকর্ড ও সীমানা সংরক্ষণ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ দখল প্রতিরোধ, অবক্ষয়িত বন পুনরুদ্ধার, আগ্রাসী প্রজাতি নিয়ন্ত্রণ এবং কর্তনযোগ্য ও কর্তন নিষিদ্ধ বৃক্ষের তালিকা হালনাগাদসহ নানা বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রণীত হয়েছে আগের আইন (২০১২) বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা ও আন্তর্জাতিক নীতিমালার পরিবর্তনের কারণে। নতুন অধ্যাদেশে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণ, শিকার, পাচার, হত্যা ও বাণিজ্যিক ব্যবহার নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় করা হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা, বন্যপ্রাণী উদ্ধার, শুশ্রুষা, পুনর্বাসন, গবেষণা, প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানুষ-বন্যপ্রাণীর সুসমন্বিত সহাবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘বন্যপ্রাণী ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও সংরক্ষণ কার্যক্রমে বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় জনগোষ্ঠী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সম্পৃক্ততার বিধান রাখা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, পাস হওয়া এই দুটি অধ্যাদেশ দেশের বনসম্পদ, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে পরিবেশগত নিরাপত্তা জোরদার হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ প্রকৃতি সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।





