তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছর, ক্ষতিপূরণ ও মালিকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডের কারখানায় ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন আরও অনেকে। সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় তাজরীন ফ্যাশনসের সামনে পাঁচ জন আহত শ্রমিক ভবনের সামনে কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন।
পেছনে বহুতল ভবনের দ্বিতীয় তলার ফটকে তালা ঝুলছে। ভেতরের দেয়াল ও ছাদে আগুনের ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। বিভিন্ন তলার ভাঙা জানলা রয়েছে। নিহত ও আহত শ্রমিকদের স্বজন, শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভবনের সামনে জড়ো হয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং ঘটনার দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি করেন।
নাটা বেগম, আহত শ্রমিকদের একজন, বলেন, “গতকাল গোপালগঞ্জ থেকে আসছি। ওই দিন জানলা দিয়ে লাফ দিয়ে বাঁচেছি। আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।” রংপুরের মাহমুদা বেগম বলেন, “ওই দিন তো আগুন থেকে বাঁচেছি। ভয় লাগে ভবন ভাঙলে মরার মতো। তাই এখানে ঘুমাইছি। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই, মালিকের শাস্তি চাই।”
মাদারীপুরের খাদিজা আক্তার (২৫) বর্ণনা দেন, “ছয়তলায় সুইংয়ের হেলপার ছিলাম। ফায়ার অ্যালার্ম বাজছিল। সবাই দৌড়াচ্ছিল। আমি সাহস না পেয়ে অন্য পাশ দিয়ে নামার চেষ্টা করে নিচে পড়ি। মাথায় আঘাত পাই, তিন বছর মানসিক সমস্যা ভোগ করেছি। আমরা বাঁচতে চাই।”
শ্রমিক সংগঠনগুলো অগ্নিকাণ্ডকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, “বিগত সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি, পুনর্বাসন করেনি। তাজরীন মালিককে পুরস্কৃত করেছে। ১৩ বছর পরও কেউ শিক্ষা নেয়নি। আমরা দাবি করছি: সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়ন, দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।”





