ডাকসু নির্বাচন স্থগিতাদেশে চেম্বার আদালতের মেয়াদ বাড়ল, শুনানি বুধবার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনটি আগামীকাল বুধবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য এক নম্বর আইটেম হিসেবে থাকবে।’
এর আগে এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গতকাল সোমবার ডাকসুর নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকে যায়। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে গতকাল চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত নিয়মিত সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন না করা পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন আদালতে দাখিল করা হয়। এরপর সম্পূরক কার্যতালিকায় আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে এবং শুনানি হয়। আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরের সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ৯ সেপ্টেম্বর। নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন এস এম ফরহাদ, যিনি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নিয়ে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা বিষয়ে গত ২৮ আগস্ট এক প্রার্থী রিট দায়ের করেন। রিটের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন।
হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান, ডাকসুর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না। ফরহাদের সংগঠন সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে আবেদনকারীকে নির্দেশ দেন আদালত। ট্রাইব্যুনালকে অভিযোগ অনুসন্ধান করে রিট আবেদনকারী, ফরহাদসহ নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনে ২১ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদসহ অন্তত ১০টি প্যানেল। এবারের নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সদস্য পদে সবচেয়ে বেশি ২১৭ জন প্রার্থী। ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।