লর্ডসে ব্যর্থ জাদেজার বীরত্ব, ইংল্যান্ডের নাটকীয় জয়

১৪ জুলাই- ইংলিশ ক্রিকেটের ইতিহাসে স্মরণীয় এক দিন। ২০১৯ সালে এই দিনেই বেন স্টোকসের নায়কত্বে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। ছয় বছর পর লর্ডসের মঞ্চেই আবারও স্টোকস, আবারও জয়ের মহাকাব্য। এবার টেস্ট ক্রিকেটে। ভারতকে মাত্র ২২ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড, আর জয়ের নায়ক? আবারও সেই বেন স্টোকস।
জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৯৩ রান। টার্গেট ছোট, কিন্তু চ্যালেঞ্জটা বিশাল। কারণ উইকেটে ফাটল ধরেছে, বল ঘুরছে, আর ইংল্যান্ডের বোলাররা যেন আগুনে পরিণত হয়েছেন।
এমন মুহূর্তেই দাঁড়িয়ে গেলেন রবীন্দ্র জাদেজা। এক পাশে একে একে সব উইকেট পড়লেও তিনি ছিলেন অবিচল। ব্যাট হাতে খেলেছেন ১৮১ বলের ৬১ রানের অতিমানবীয় ইনিংস, যা ভারতীয় সমর্থকদের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশায় বাঁচিয়ে রেখেছিল।
কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। ৭৫তম ওভারে মোহাম্মদ সিরাজ বোল্ড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয় ভারতের ইনিংস। আর ইংল্যান্ড উল্লাসে ভাসে।
জাদেজা ভারতীয়দের মন জয় করলেও চোট নিয়ে খেলা, হাতে ব্যান্ডেজ থাকা বেন স্টোকসও ছিলেন নায়ক। শেষ ইনিংসে টানা ২৪ ওভার বোলিং, উইকেট ৩টি- আর প্রতিটা উইকেটেই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো তাৎপর্য।
স্টোকসের পাশাপাশি জোফরা আর্চার (৩/৫৫) ও ব্রাইডন কারস (২/৩০) ভারতের ব্যাটিং অর্ডার ছিন্নভিন্ন করে দেন। শুরুর ২৫ রানের মধ্যেই ফিরে যান যশস্বী, গিল, নায়াররা। অল্প সময়েই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ভারত, তখনই হাল ধরেন জাদেজা।
প্রথম ইনিংসে দুই দলই ৩৮৭ রান করে। ইংল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি করেন জো রুট (১০৪), ভারতের পক্ষে কেএল রাহুল (১০০) এবং জাদেজা (৭২)।
তবে পার্থক্য গড়ে দেয় দ্বিতীয় ইনিংস। ইংল্যান্ড তুলেছিল মাত্র ১৯২, কিন্তু জবাবে ভারতের ১৭০ রানে গুটিয়ে যাওয়া- সেখানেই ম্যাচ হাতছাড়া হয়।
৪৪ রান, ২/৬৩ ও ৩/৪৮- স্টোকসের পরিসংখ্যান যতটা বলছে, বাস্তব অবদান তার চেয়েও অনেক বেশি। শরীর ও আত্মা দিয়ে টেস্ট জিতিয়ে এনেছেন তিনি। ম্যাচশেষে সতীর্থদের সঙ্গে হাতজোড় করে উল্লাসে ভেসেছেন, যেন ছয় বছর আগের বিশ্বকাপেরই আরেক রূপ।
ম্যাচ সারাংশ
ইংল্যান্ড : ৩৮৭ ও ১৯২
ভারত : ৩৮৭ ও ১৭০
ফলাফল : ইংল্যান্ড জয়ী ২২ রানে
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : বেন স্টোকস