সিলেটে জুলাইযোদ্ধাকে মারধর, পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
সিলেটে চায়ের দোকান খোলা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গেজেটভুক্ত জুলাইযোদ্ধাকে এক পুলিশ সদস্য মারধর করে আহত করার খবর পাওয়া যায়। শনিবার (২১ জুন) ভোরবেলা নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্টে চায়ের টং দোকান খোলা নিয়ে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশের মারধরে আহত হন জুলাইযোদ্ধা ইসমাইল উদ্দিন।
জানা যায়, শনিবার (২১ জুন) ভোরবেলা নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্টে চায়ের টং দোকান খোলেন ইসমাইল উদ্দিন। দোকান খোলার কিছুক্ষণ পর লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জসিম সঙ্গীয় ফোর্সসহ তাকে বাঁধা প্রদান করে হুমকি-ধামকি দিয়ে ইসমাইল উদ্দিনকে মারধর করেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা এবং জুলাইযোদ্ধাদের সহযোদ্ধারা। এই ঘটনায় জুলাইযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে নুরুল ইসলাম সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ইসমাইল উদ্দিন জুলাই-আগস্টের আগে সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠলে জীবন-জীবিকার তাগিদে নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্টে ভাসমান একটি চায়ের দোকান করেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার ভোরবেলা দোকান খুলে বসলে লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জসিমসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা তাকে গিয়ে দোকান বন্ধ করতে বলেন। এসআই জসিম এসে ‘এতো সকালে দোকান খোলা কেন’ জানতে চেয়ে তাকে ভ্যানগাড়িসহ তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। আমি একজন গেজেটভুক্ত জুলাইযোদ্ধা। আন্দোলনে আহত হওয়ার পর দীর্ঘসময় বসে থাকতে পারি না, তাই এই দোকান দিয়েছি। ইসমাইল জুলাইযোদ্ধার পরিচয় দেয়ার পরপরই এসআই জসিম উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘তুই যোদ্ধা! তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’—এই বলে কিল, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে মারতে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবলের হস্তক্ষেপে এসআই জসিম ও অন্যান্য পুলিশ সদস্য তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান।
আহত ইসমাইল উদ্দিন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আগে তিনি সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠলে জীবন-জীবিকার তাগিদে নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্টে ভাসমান একটি চায়ের দোকান করেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার ভোরবেলা দোকান খুলে বসলে লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জসিমসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা তাকে গিয়ে দোকান বন্ধ করতে বলেন। তিনি তখন তার পরিচয় দিলে, এস আই জসিম উত্তেজিত হয়ে ইসমাইলকে বেদড়ক মারধর শুরু করে গুরুত্বর আহত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে ইসমাইল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’
সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটে চা দোকান খোলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত ও ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে স্থানান্তরিত করা হয়। পাশাপাশি ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’





