সিলেটে এক ব্যক্তির দা’ফনের আগ মুহূর্তে জানা গেল তিনি জীবিত

সিলেটের জকিগঞ্জে ঘটেছে এক বিস্ময়কর ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। শিহাব উদ্দিন সাবু (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত ভেবে লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে জানা গেল তিনি জীবিত আছেন! এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (২২ জুন) সকালে, উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম (এতিছানগর) এলাকায়।
সূত্রে জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ফেসবুকে পোস্ট দেখে বাবুরবাজার এলাকার বাবুল আহমদ লাশটি তার মানসিক ভারসাম্যহীন বড় ভাই শিহাব উদ্দিন সাবু মিয়া ভেবে হাসপাতালে যান এবং তা সনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে যথারীতি দাফনের প্রস্তুতি শুরু হয়, কবরও খোঁড়া হয়।
তবে শেষ মুহূর্তে এক আত্মীয় জানায়, সাবু মিয়া জীবিত এবং স্থানীয় গঙ্গাজল বাজারে অবস্থান করছেন। খবরটি শুনে দাফনের আয়োজন থেমে যায়। বাবুল আহমদ এরপর লাশটি ফেরত দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তবে স্থানীয় যুব জামায়াত নেতা মিজানুর রহমানের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে মিজানুর রহমান জানান, “দুই দিন আগে পৌরসভার শেওলা রাস্তার মুখে পা ভাঙা অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। আমরা মানবিক কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে তিনি মারা যান। বাবুল আহমদ ও তার স্বজনরা এসে মৃতদেহ তাদের আত্মীয় দাবি করে নিয়ে যান। পরে জানানো হয়, এটি ভুল পরিচয় ছিল। ওসি সাহেবের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা লাশ দাফন করি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল আহাদ বলেন, “অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর নিয়ম অনুযায়ী আমরা লাশ সিলেটে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে কিছু লোক আত্মীয় পরিচয়ে এসে লাশ নিয়ে যান। এখন শুনছি, মৃত ব্যক্তি তাদের কেউ নন।”
এদিকে, জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “মৃত ব্যক্তি অজ্ঞাত পরিচয়ের ছিলেন। তার পরিচয় সনাক্ত হওয়ার আগেই লোকজন লাশ নিয়ে যায়। পরে যে ব্যক্তি জীবিত পাওয়া গেছে, সেই তথ্য আমাদের জানা নেই।”
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, লাশ শনাক্তে আরও সতর্ক ও প্রমাণভিত্তিক ব্যবস্থা না থাকলে এমন বিভ্রান্তি আরও ঘটতে পারে।