ধৈর্যশীলদের জন্য আল্লাহর বিশেষ পুরস্কার
ধৈর্য আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্যতম গুণ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে ধৈর্যের গুরুত্ব, মর্যাদা ও এর প্রতিদান সম্পর্কে বহুবার আলোচনা করা হয়েছে। ধৈর্যশীল ব্যক্তিরা শুধু মানবজীবনে নয়, আখেরাতেও লাভ করেন মহান প্রতিদান।
ধৈর্য আল্লাহপ্রদত্ত মহান গুণ
ধৈর্য আল্লাহ তাআলার এক মহামূল্যবান নেয়ামত, যা তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে দান করেন। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-কে বারবার মক্কার কাফিরদের হাতে অত্যাচারিত হতে হয়েছে, কিন্তু তিনি কখনও ধৈর্যচ্যুতি দেখাননি। বরং কোরআনে আল্লাহ বলেন—‘আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। আপনার ধৈর্য হবে আল্লাহর সাহায্যেই।’ (সুরা আন-নাহল: ১২৭)
ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যধারণকারীদের সঙ্গে থাকেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)
আল্লাহ যার সঙ্গে থাকেন, তার বিজয় ও সফলতা তো অবধারিত।
বিপদের মাধ্যমে ধৈর্যের পরীক্ষা
আল্লাহ তাআলা বলেন—‘আমি তোমাদেরকে অবশ্যই কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। আর তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫)
ধৈর্যশীলদের জন্য অফুরন্ত পুরস্কার
আল্লাহ বলেন— ‘নিশ্চয় ধৈর্যশীলদেরকে তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে দেওয়া হবে হিসাব ছাড়াই।’ (সুরা যুমার: ১০)
ধৈর্যশীলদের প্রশংসা ও রহমত
যারা মুসিবতে ধৈর্য ধরেন এবং মহান প্রভুর প্রশংসা করেন, তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর বিশেষ রহমত ও পথনির্দেশ। কোরআনে এসেছে— ‘তাদের প্রতি রয়েছে তাদের রবের দরুদ ও রহমত। আর তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত।’ (সুরা বাকারা: ১৫৭)
হাদিসে ধৈর্যের মর্যাদা
নবীজি (স.) বলেন— ‘যে ব্যক্তি ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীলতা দান করেন। ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নেয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি।’ (বুখারি: ১৪৬৯)
আর এক হাদিসে এসেছে— ‘আল্লাহ তাআলা বলবেন, হে বনি আদম! তুমি যদি প্রথম ধাক্কায় ধৈর্য ধরো ও তার প্রতিদানে সাওয়াবের আশা করো, তবে আমি তোমার জন্য জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুতে সন্তুষ্ট হবো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৫৯৭)
শেষ কথা, ধৈর্য কেবল একটি গুণ নয়; এটি সফলতা, জান্নাত ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সোপান। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ধৈর্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে সেই বিশেষ পুরস্কার লাভের তাওফিক দিন। আমিন।





