চাকরিহারাদের নিয়ে আবার বড় নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

এসএসসি-র নিয়োগপ্রক্রিয়ায় ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ করে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানাল, এ বিষয়ে দেশের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না যে রায় দিয়েছিলেন, তা একেবারে সঠিক। ওই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবেন না, বসতে পারবেন না পরীক্ষায়।
‘র্যাঙ্ক জাম্প’ কী?
এসএসসি-র মেধাতালিকার ক্রম বা ‘র্যাঙ্ক’-এ পিছিয়ে থেকেও অন্যদের টপকে উপরে উঠে আসাকে ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ বলা হচ্ছে। যাঁরা এ ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদেরও ‘অযোগ্য’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁরা চাকরি পাওয়ার ফলে ক্রমতালিকায় উপরে থাকা প্রার্থীরা, যাঁরা পরীক্ষায় তুলনামূলক ভাল ফল করেছিলেন, তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন।
দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তাতে চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৩৫ জনের। নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছিল, এর মধ্যে কয়েক জন ‘অযোগ্য’ (দাগি বা টেন্টেড) হিসাবে চিহ্নিত। তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে হবে। তাঁরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবেন না। এই ‘অযোগ্য’দের তালিকায় রয়েছেন মূলত তিন ধরনের চাকরিহারা— যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা প্যানেল-বহির্ভূত ভাবে বা প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে চাকরি পেয়েছেন এবং যাঁরা ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ করে চাকরি পেয়েছেন। তৃতীয় পর্যায়ের চাকরিহারারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা সাদা খাতা জমা দেননি। প্যানেলেও তাঁদের নাম ছিল। পরীক্ষায় দিয়েই তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। তাই নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়াতেও পরীক্ষায় বসার সুযোগ তাঁদের দেওয়া হোক।
বুধবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেবি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত জানিয়েছে, বিচারপতি খন্না যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাতে তারা আর হস্তক্ষেপ করবে না। কারণ ওই নির্দেশে কোনও ভুল ছিল না।
এসএসসির দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাঁরা মামলা করেছিলেন, তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না যে রায় দিয়েছিলেন, তাতে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করেনি। র্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি পেয়েছেন, এমন প্রার্থীদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, র্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি নেওয়াও দুর্নীতি। তাঁরাও দুর্নীতির অংশ। তাই নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় তাঁরা যোগ দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।’’