সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান
নানা অনিয়ম ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কার্যালয় (দুদকের) সমন্বিত সিলেট জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
সোমবার (২৬ মে) বিকেলে দুদকের কর্মকর্তরা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের সেবা বিভাগ, প্রশাসনিক শাখা, ডিসপেনসারিসহ নানা শাখায় অভিযান চালান।
দুদক কর্মকর্তারা দুই ঘণ্টব্যাপি অভিযানে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা, চিকিৎসকদের উপস্থিতি, সরকারি ঔষধ ক্রয় ও বিতরণ এবং স্টোর রুম ও প্রশাসনিক কক্ষের বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই করেন।
অভিযানে হাসপাতালের শৌচাগার, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতি, ঔষধ ক্রয় ও সরবরাহে অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে। এ সময় হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তা।
দুদক জানায়, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে নিয়মিত উপস্থিত না থাকার প্রবণতা রয়েছে। অনেকেই নিয়মিত অফিস করেন না। অভিযানের সময় অফিস প্রধানসহ দুজন অনুপস্থিত ছিলেন। টেকনিশিয়ান আনোয়ার হোসেন নিয়মিতভাবেই অনুপস্থিত থাকেন। ছুটির কোন কাগজপত্র পাওয়া যায় নি। অভিযানে সবচেয়ে বড় অনিয়ম ধরা পড়ে হাসপাতালের ফার্মেসিতে। সরকারি ও স্থানীয়ভাবে কেনা ঔধধের রেজিস্ট্রারে গরমিল পাওয়া গেছে। রেজিস্ট্রারে না থাকলে গুদামে লুকিয়ে রাখা বিপুল পরিমাণ দামী অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ পাওয়া গেছে। কিন্তু রোগীদের জানানো হয়েছে, এসব ঔধুধ হাসপাতালে নেই।
সুলেমান নামের একজন কর্মী রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে ছিলেন, যিনি এখন অন্যত্র কাজ করছেন। তাই মে মাসের আগের কোনো রেজিস্ট্রার পাওয়া যায়নি। স্থানীয়ভাবে ২ থেকে ৩ কোটি টাকার ঔষধ কেনা হলেও তার কোনো হিসাব নেই। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ঔষধ বিতরণকারীর আলমারিতেও রেজিস্ট্রারবিহীন বহু ঔষধ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঔষধ রোগীদের না দিয়ে স্থানীয় ফার্মেসিতে বিক্রি করা হয়।
দুদকের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার বলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের বিষয়ে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। রোগীদের ব্যবহারের বাথরুমগুলো এতটাই নোংরা যে তা ব্যবহার অনুপযোগী। অথচ চিকিৎসক ও নার্সদের বাথরুম একেবারে পরিস্কার। আমরা গুদামে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ পেয়েছি, যা রেজিস্ট্রারে নেই।





