ফিলিস্তিনিদের রক্তপিপাসু সেই হলিউড অভিনেতার বাড়ি দাবানলে পুড়ে ছাই

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন করেছিলেন এমি পুরস্কারজয়ী হলিউড অভিনেতা জেমস উডস। তিনি বিভিন্ন সময় ইসরায়েলের গণহত্যার সমর্থন দিয়েছিলেন। এবার দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় ফিলিস্তিনে ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞে এই অভিনেতার সমর্থনের বিষয়টি সামনে এনে বিদ্রূপ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
গত প্রায় পাঁচ দিন ধরে নজিরবিহীন দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। এতে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাড়ি হারিয়েছেন হলিউডের অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীও। তাদেরই একজন অভিনেতা জেমস উডস।
লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় অবস্থিত উডসের বাড়িটি এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ। তবে ঘরবাড়ি হারানো হলিউড তারকাদের মধ্যে আলাদা করে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে জেমস উডের বাড়ি পোড়ার বিষয়টি। এর কারণ অভিনেতার বিতর্কিত রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। এ কারণেই অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করছেন।
গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) সিএনএন-এ এক সাক্ষাৎকারে ৭৭ বছর বয়সি অভিনেতা তার বাড়ি পুড়ে যাওয়া নিয়ে রীতিমতো বিলাপ করছিলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলতে থাকেন, ‘সেদিন বাড়ির পুলে সাঁতার কাটলাম। আর পরদিনই সবকিছু শেষ।’ নিজের বাড়ির একটি আবেগঘন মুহূর্তের কথা স্মরণ করেন।
ঘর পুড়ে যাওয়ার কারণে সিএনএনে গিয়ে উডসের এমন বিলাপ অনলাইনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা সমর্খন জানিয়ে করা তার পূর্ববর্তী বিতর্কিত বক্তব্য তুলে ধরেছেন। গাজায় ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একের পর এক পোস্ট করে পূর্ণ সমর্থন ও গণহত্যায় উৎসাহ দেন জেমস উডস।
তার অনেক এক্স পোস্টের মধ্যে একটি পোস্টের একটি স্ক্রিনশট রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। ইংরেজিতে লেখা সেই পোস্টে তিনি যা বলেছিলেন তার অর্থ এমন, ‘কোনো যদ্ধিবিরতি নয়। কোনো আপোষ নয়। কোনো ক্ষমা হবে না। তাদের সবাইকে হত্যা করো।’ তার এই পোস্ট স্পষ্টতই গাজায় গণহত্যার উসকানি নির্দেশ করে।
সেই সময় জেমস উডের করা বিতর্কিত সব পোস্ট তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয় এবং লস অ্যাঞ্জেলেস দাবানলের পর তা আবারও সামনে আসে। এতে অনেকেই তার এসব পোস্টের জন্য জবাবদিহিতার দাবি তুলেছেন। অনেকেই বলছেন, গাজার ব্যাপারে তার বিতর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির কারণে দাবানলে বাড়ি হারানোয় তিনি কোনো সহানুভূতি পাওয়ার যোগ্য নয়।
জেমস উডের বাড়ি পোড়ার খবরে আরব লেখক ও ব্লগার আব্দুল্লাহ আলামাদি এক্স-এ লিখেছেন: ‘যে অন্যায় করে বা এর জন্য আহ্বান জানায়, আল্লাহ তাকে শিগগিরই শাস্তি দেবে। এটি ঐশ্বরিক ন্যায়বিচার যা কেবল তারাই বুঝতে পারে যাদের হৃদয়ে কিছুটা বিশ্বাস আছে।’
বিশিষ্ট আমেরিকান ইমাম ও অধিকারকর্মী ড. ওমর সুলেমান এক এক্স পোস্টে বলেন, দোয়া করি, আল্লাহ লস অ্যাঞ্জেলেসের নির্দোষ মানুষগুলোর জীবন ও সম্পদ রক্ষা করুন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের কিছুই করার নেই। ক্ষমতাধর নিষ্ঠুর মানুষগুলোর কারণে গাজার মানুষগুলো নির্মূল হয়ে যাচ্ছে। এতে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন সেই সব লোক যারা প্রাসাদতূল্য বাড়িতে নিজেদের অজেয় মনে করেন।’