ইয়েমেনে হুতি স্থাপনায় মার্কিন বাহিনীর অতর্কিত হামলা
সপ্তাহ জুড়ে হুতি ও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা বৃদ্ধি মধ্যে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ইরানের মিত্র গোষ্ঠী হুতিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় অতর্কিত বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এসব স্থাপনার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম এবং কমান্ড-ও-কন্ট্রোল সেন্টার রয়েছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক মাধ্যম এক্স এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) বলেছে, হুতিদের তৎপরতা ব্যাহত ও দমন করা এসব হামলার লক্ষ্য ছিল। এর আগে লোহিত সাগর, বাব আল-মানদেব প্রণালী ও এডেন উপসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ ও বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছিল বলেও দাবি করেছে সেন্টকম।
তবে ইয়েমেনে চালানো মার্কিন বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে- সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছু বলা হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া নিউজ এক প্রতিবদেনে জানায়, মার্কিন বাহিনী লোহিত সাগরের উপর থেকে হুতিদের অনেকগুলো ড্রোন ও জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে নামিয়েছে। এই আঘাত যুক্তরাষ্ট্র ও অংশীদার সেনাদের, আঞ্চলিক অংশীদারদের এবং আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল সুরক্ষায় সেন্টকমের চলমান প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
তবে এই হামলার মধ্যে শনিবার স্থানীয় সময় ভোররাতে সর্বশেষ ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হুতিরা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তেল আবিবের জাফা এলাকায় আঘাত হানার আগে তারা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
এরও আগে বৃহস্পতিবার ভোরে তেল আবিবের দিকে আরেকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল হুতিরা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইয়েমেনের সানা ও বন্দর শহর হোদেইদাহসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে কৌশলগত স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। এসব হামলায় অন্তত নয়জন নিহত হয়। তবে গত সপ্তাহের সোমবারও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল হুতিরা। হুতিদের দাবি, গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে এসব হামলা চালাচ্ছে তারা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আলজাজিরা এক প্রতিবদেনে জানায়, এসব হামলার মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে হুতিরা। গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রায় ১৫ মাস ধরে নির্বিচার হামলা চালিয়ে ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। একই তৎপরতার অংশ হিসেবে হুতিরা ইয়েমেনের উপকূলবর্তী লোাহিত সাগর ও আশপাশের জলপথে হামলা চালাচ্ছে। গাজার ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে তারা ইসরায়েলি ও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যস্থল করছে বলে দাবি করে আসছে তারা।
এসব হামলা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্যস্থলগুলোতে কয়েক মাস ধরে বোমাবর্ষণ করেছিল, কিন্তু তাতেও ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীটিকে থামানো যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন হুতিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। তাতে কোনো কাজ হয়নি।