আব্দুল হামিদ হত্যা মামলায় আক্তার র্যাবের হাতে গ্রেফতার
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে আব্দুল হামিদ (৫৬) হত্যা মামলায় আসামি আলী আক্তার (৩২) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আলী আক্তার উপজেলার উত্তর রানিগাঁও এলাকার দিদার হোসেনের পুত্র।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাকে বিকেলে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন ।
এর আগে বুধবার (১৬ অক্টোবর ) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্প ও র্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানে নরসিংদী জেলার মাধবদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় । পরে তাকে বৃহস্পতিবার সকালে চুনারুঘাট থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল।
উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট উত্তর রাণিগাঁও গভীর রাতে একদল লোক পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাস ফেরত আব্দুল হামিদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় গৃহকর্তা আব্দুল হামিদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এতে গৃহকর্তার ছেলে দুবাই প্রবাসী রাসেল মিয়ার স্ত্রী রিতি আক্তার (২৬) কে বেধরক মারপিট করে। দুর্বৃত্তদের হামলায় প্রবাসীর স্ত্রী প্রায় দুইদিন যাবৎ অজ্ঞান ছিলেন। পরে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেন।
প্রতিবেশী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওইদিন বুধবার রাতে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন নিহত আব্দুল হামিদ ও তার পুত্রবধূ রিতি আক্তার। নিহতের দুই ছেলে দীর্ঘদিন ধরে আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। পুত্রবধূ রিতি আক্তারও দুবাই থেকে ঘটনার মাসখানেক পূর্বে স্বামী রাসেলের কাছ থেকে বাড়িতে আসেন। ওইদিন রাতে নিহত আব্দুল হামিদের স্ত্রী চলে যান পিত্রালয়ে। বাড়িতে শুধু আব্দুল হামিদ ও তার পূত্রবধূ রিতা আক্তার ছিলেন। তারা রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। জনশূন্য প্রবাসীর ঘরে গভীর রাত ১৫/১৬ জনের একদল মুখোশধারী লোক ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে তার হাত-পা বেঁধে ঘরের সবকিছু লোটপাট করে। এতে আব্দুল হামিদ চিৎকার করলে আব্দুল হামিদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তাণ্ডব চালায়। তখন পুত্রবধূ চিৎকার করলে দুর্বৃত্তরা প্রবাসী রাসেল মিয়ার সন্তানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রী রিতি আক্তারের হাত-পা বেঁধে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা হাতি নেয়। ঘটনার ৮দিন পর নিহতর স্ত্রী লুৎফুল বাদি হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে চুনারুঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর কুটি মিয়া নামে একজন গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পালিয়ে যায়।
নিহতর মেয়ে সুজিয়া বেগম জানান, মামলার করার পর থেকে আসামি পক্ষের লোকজন মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। আমরা নিরাপত্তহীনতায় ভূগছি। তিনি তার পিতা হত্যাকান্ডের জড়িত সকল আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচার চান ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে থানার উপরিদর্শক মো: জহির আলী জানান, এ মামলার আক্তার সহ দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে, জড়িত বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।