আদালতের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার মোহাম্মদপুরে গুলিতে নিহত হওয়া ভোলার ওমর ফারুক (১৬) নামে এক কিশোরের মরদেহ ৫৪ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে নিহতের পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহত ওমর ফারুক একই ইউনিয়নের মিলন ফরাজীর ছেলে।
ওমর ফারুক ঢাকায় একটি মুদি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতো। গত ৪ আগস্ট ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্য হয় তার। পরে গত ৬ আগস্ট তার স্বজনরা ফারুকের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে নিহতের বাবা মিলন ফরাজী বাদী হয়ে ৫৮ জনকে আসামি করে ঢাকার সিএমএম আদালতে হত্যা মামলা করেন বলে জানা গেছে। হত্যা মামলাটি দায়েরের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশ দেন আদালত।
নিহত ওমর ফারুকের স্বজনরা জানিয়েছেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘর্ষ চলকালীন দোকানের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার আল্লাহ করিম মসজিদ ফুটওভার ব্রিজের নিচে প্রথমে গুলিবিদ্ধ হয় ওমর ফারুক। পরে তার মৃত্যু হয়।
চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, ঢাকা থেকে পিবিআইয়ের একটি টিম এসে মরদেহটি কবর থেকে উত্তোলন করে। দুলারহাট থানা পুলিশ তাদেরকে সহযোগিতা করেছে।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালেক মুহিত ঢাকা পোস্টকে জানান, ওমর ফারুক নিহত হওয়ার ঘটনায় ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশে ঢাকা থেকে পিবিআইয়ের একটি টিম চরফ্যাশন এসে মরদেহটি কবর থেকে উত্তোলন করে। এ সময় স্থানীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম।
প্রসঙ্গত, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় সহিংসতায় ভোলার ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। ভোলায় গত ৪ আগস্ট সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান একজন। নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ওমর ফারুক একজন।