রাজধানী থেকে ছেড়েছে দূরপাল্লার বাস

গত কয়েক দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে দেশব্যাপী তুমুল সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা অব্যাহত থাকার প্রভাব পড়েছিল গোটা গণপরিবহন ব্যবস্থায়।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার জনমনে এখনো আতঙ্কের প্রচ্ছন্ন ছাপ রয়ে গেছে। তবে অচলাবস্থা কাটিয়ে রাজধানীসহ দেশের নানা জেলা-উপজেলার সড়কে গণপরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন গত রবিবার বন্ধ হয়ে যায় সারাদেশের সঙ্গে ট্রেন চলাচল। এর আগে তিন দিন স্বল্প দূরত্বে কারফিউ শিথিল থাকা অবস্থায় ট্রেন চলাচল করেছিল। যদিও ট্রেন চলাচলের বিষয়ে রেলয়ের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তারাও কিছু জানাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার না থাকায় মন্ত্রণালয়য়ের কেউ রেল ভবনে যাননি। রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী অফিসে গেলেও তারা দুপুরের মধ্যে অফিস ত্যাগ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক কর্মকর্তা জানান, ‘সবাই একটা আতঙ্কের মধ্যে আছে। ট্রেন চলাচল নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার কেউ নেই। সেনাবাহিনী থেকে কোনো ঘোষণা আসলে হয়তো জানতে পারব।’

গতকাল বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী জানান, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে ‍যিনি দায়িত্ব নেবেন এ মন্ত্রণালয়ের, তার নির্দেশনা মোতাবেক আমরা রেল চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

এ দিকে গত মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে সড়ক ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন গণপরিবহন মালিকেরা। গতকাল বুধবার রাজধানীর দুটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে স্বল্প বা দীর্ঘ দূরত্বের পথে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে।

এ দিকে রাজধানীর তিনটি টার্মিনাল সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী থেকে দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল শুরু করেছে। পরিবহন শ্রমিকেরা বলছেন, গতকাল থেকে যাত্রী কিছুটা বেশি।

গতকাল বুধবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল অভিমুখী সব বাসের কাউন্টার খোলা হয়েছে।

হানিফ পরিবহনের একটি কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার কাউন্টার বন্ধ থাকলেও যাত্রীর সাড়া পাওয়ায় তারা গতকাল কাউন্টার খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘কাউন্টার বন্ধ থাকলেও অনলাইনে আর মোবাইলে অনেক যাত্রী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।’

সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গতকাল বুধবার দুপুর থেকে সায়েদাবাদ থেকে সব রুটে বাস চলাচল শুরু করেছে। বেশ যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে। সকালে ধারণক্ষমতার মাত্র ২০-৩০ পারসেন্ট যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়লেও, দুপুর হতেই তা ৭০ শতাংশের মতো পাওয়া যাচ্ছে।’

মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুর, রাজশাহীসহ উত্তরবঙ্গের নানা জেলার যাত্রী এসেছেন। ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের যাত্রীরাও। ময়মনসিংহগামী এনা পরিবহন, সৌখিন পরিবহন, আলম এশিয়া পরিবহন, জামালপুরের রাজিব পরিবহনের বাসগুলোতে ধারণক্ষমতার ৭০ শতাংশ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান কাউন্টার ব্যবস্থাপকেরা।