৭১ বছর বয়সে মারা গেলেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার
ব্যাটার, কোচ, নির্বাচক- ভারতীয় ক্রিকেটের প্রায় সবক্ষেত্রেই অবদান ছিল অংশুমান গায়কোয়াড়ের। তাকে বলা হতো ভারতীয় অন্যতম সাহসী ক্রিকেটার। ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর অবশেষে হার মানলেন এই কিংবদন্তি। ৭১ বছর বয়সে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
চলতি বছর জুনে চিকিৎসা শেষে লন্ডনে থেকে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর আবারও দেখা দেয় নানা শারীরিক জটিলতা। এতে ভর্তি করা হয় বরোদার হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। সেখানে বুধবার (৩১ জুলাই) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
১৯৭৫ সালে ভারতীয় জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত খেলেছেন ৪০ টেস্ট ও ১৫ ওয়ানডে। টেস্টের ৭০ ইনিংস্টে তার ১৯৮৫। এরপর জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে হন জাতীয় দলের কোচ।
১৯৮৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেন ২০১ রানের ইনিংসে। টেস্ট ক্যারিয়ারের এটি তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সবচেয়ে ধীরতম দ্বিশতকের রেকর্ডও এটি। ৪৩৬ বলের ইনিংসটি খেলতে ৬৭১ মিনিট ব্যাট করেন গায়কোয়াড়। ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসেও সেঞ্চুরি আছে তার।
ক্রিকেট ছাড়ার পর ১৯৯৭-২০০০ সালে দুই মেয়াদের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার অধীনের ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে খেলে ভারত। চলতি বছর জুলাই মাসের শুরুর দিকে তার চিকিৎসার জন্য এক কোটি রুপি দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
তার মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে ভারতের ক্রিকেটাঙ্গনে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সুনিল গাভাস্কার শোকবার্তায় বলেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটের তিন সাহসী ক্রিকেটার একনাথ সোলকার, মোহিন্দর অমরনাথ এবং অংশুমান গায়কোয়াড়ের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। মন খারাপ করে দেওয়ার মতো খবর। চার্লি (গায়কোয়াড়) দেখিয়ে দিল, বিনা লড়াইয়ে সে জীবনের উইকেটও ছুড়ে দেবে না। শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেল। ওর আত্মার শান্তি কামনা করি।’
এ ছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি ও বিসিসিআইয়ের সচিব জয় শাহ। ২২ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ৪০ টেস্টে ৩০.০৭ গড়ে ১৯৮৫ রান করেছেন তিনি।
দুটি শতকের সঙ্গে রয়েছে ১০টি অর্ধশতক। ১৫ ওয়ানডেতে ২০.৬৯ গড়ে তিনি ২৬৯ রান করেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০৬ ম্যাচে ৩৪ শতকে ১২,১৩৬ রান করেছেন গায়কোয়াড়।