ফ্রান্সের নির্বাচনে জয়ী বাম জোট, হতে পারে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট
ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছে বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি)। প্রথম ধাপের নির্বাচনে উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি (আরিএন) এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় দফায় বাজিমাত করল এনএফপি। এ পর্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল। আর উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালির অবস্থান তৃতীয়।
তবে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটে কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এই তিনপক্ষের একসঙ্গে কাজ করারও ইতিহাস নেই। এমন অবস্থায় দেশটি এখন ঝুলন্ত পার্লামেন্টের পথে।
ফ্রান্সে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হয় ২৮৯টি আসন। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যের বরাতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বামপন্থী এনএফপি জোট ১৮২ আসন পেয়েছে। সেক্ষেত্রে বাম জোটকে সরকার গঠন করতে হলে অন্যদের সমর্থন নিতে হবে। তাতে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট গঠনের সম্ভাবনাই বেশি।
নির্বাচনে এনসেম্বল জোট ১৬৮ আসন এবং আরএন ১৪৩টি আসনে জয়ী হয়েছে। প্রথম দফার নির্বাচনে আরএনের বিজয়ের পর বিভিন্ন জনমত জরিপে বলা হয়েছিল, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনেও দলটি বিজয়ী হবে।
প্রথম দফা ভোটের পর অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে আসা ন্যাশনাল র্যালিকে নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন ফ্রান্সের উদার ও মধ্যপন্থীরা। তাই আরএনকে ঠেকাতে বামপন্থীদের জোট এনপিই ও ম্যাক্রোঁর জোট টুগেদার অ্যালায়েন্সের মধ্যে আপস হয়। আরএনের বিরুদ্ধে পড়া ভোটগুলো যেন একজনই পান, সেজন্য এই দুই জোট মিলে দুই শতাধিক প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরিয়ে দেন। এই কৌশলেই বাজিমাত হয়েছে।
আরএন নেতা জরদান বারদেলা ক্ষোভ জানিয়ে বলেছেন, তাদের জয় ঠেকাতে ‘অস্বাভাবিক রাজনৈতিক জোট’ করা হয়েছে। ন্যাশনাল র্যালি জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হতেন বারদেলা।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ গত ৯ জুন আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এরপর সোশ্যালিস্ট (সমাজতান্ত্রিক), পরিবেশবাদী, কমিউনিস্ট ও কট্টর বামপন্থী দল ফ্রান্স আনবোয়েড পার্টি (এলএফআই) মিলে নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনপিই) গঠন করে। এই দলগুলো আগে একে অপরের সমালোচনা করত। কেননা, দলগুলোর আদর্শ ও কর্মপদ্ধতির মধ্যে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। তারপরও শুধুমাত্র কট্টর ডানপন্থীদের সরকার গঠনের সুযোগ না দিতেই দলগুলো এই নির্বাচনী জোট গঠন করে