কোনো ‘দখলবাজকে’ ছাড় দেওয়া হবে না

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতা থেকে সিলেট নগরীকে রক্ষায় কোনো ‘দখলবাজ’ কিংবা ‘সন্ত্রাসীকে’ ছাড় দেওয়া হবে না।
শনিবার শনিবার (২২ জুন) বেলা ৩টায় নগরের স্টেডিয়াম এলাকায় মাদার কেয়ার হাসপাতালের পাশের বৈঠাখাল ছড়া পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তার সঙ্গে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নগরীর ভেতর ২৩টি ছড়া আছে ১৯৫৬ সালের ম্যাপ ধরে আমরা কাজ করবো। নগরীর সমস্ত ছড়া উদ্ধার ও খনন করে সুরমা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করবো এবং সুরমা নদী খনন করা হবে। শুধু সিটি করপোরেশন এলাকা খনন করলে হবে না। উৎপত্তি স্থল থেকে খনন কাজ করতে হবে।
সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে আমাকে সহযোগিতা করছেন। তার ১০ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কাজ করবো এবং তিনি কোথায় কোথায় প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন সেগুলোও আমাকে অবহিত করছেন।
আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘নগর বাঁচাও, সিলেট বাঁচাও’ এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ নগরীকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সিলেটের স্বার্থে আমরা দলমত নির্বিশেষে সবাই একমত। সিলেট নগরীর মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। আমরা জনগণের প্রতিনিধি। আমরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। কিছু সংখ্যক মানুষের স্বার্থে সিলেট শহর ঢুবে যাবে বৃহৎ নগরবাসীকে ভোগান্তি হবে সেটা আমরা মেনে নিবো না।
যারা ছড়া দখল করে বসে আছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নিজ নিজ দায়িত্বে ছড়া ছেড়ে দিন। না হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ছড়া উদ্ধার করবো। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সিলেট নগরী রক্ষায়, প্রবাসীদের জান মাল রক্ষায় এবং সিলেটে বিনোয়গ রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। কোন দখলবাজ বা সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবেনা।
সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি নগরী। বহু বছর ধরে আমরা দেখছি নগরীর মানুষ পানিবন্দি হয়ে যান এবং মালামাল নষ্ট হয়ে যায় এটি আর দেখতে চাইনা। তবে এটির দায়ভার একা সিটি কর্পোরেশনের দায় নয়। যে সকল ছড়া, খাল আছে সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ কিছু ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা যদি নগরবাসীর কথা বিবেচনা করে এগুলো ছেড়ে দেন তাহলে তাদের স্বাগত জানাবো অন্যথায় বর্তমান মেয়র তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ছড়াগুলো উদ্ধার করা গেলে সিলেটবাসী বন্যার কবল থেকে অনেকটা রক্ষা পাবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনের সঙ্গে তুলনা করেন তাহলে সিলেট অনেক পিছিয়ে। এর মূল কারণ হচ্ছে আমাদের নেতৃত্বের অভাব। আমার বিশ্বাস বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মধ্যে এই নেতৃত্ব গুণ আছে। তিনি দায়িত্ব নিয়ে সিলেটের উন্নয়ন করতে পারবেন। সিলেট সিটির মাস্টার প্ল্যান অনুয়ায়ী কাজ করলে মূল উৎপত্তি স্থল থেকে নগরীর ছড়া সরকারি ভাবে খননসহ শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ করা যায় তাহলে এর লাঘব হবে। কালক্ষেপণ না করে একটা একটা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমার বিশ্বাস মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এগুলো পারবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও কাছের মানুষ। আমরা আশা করি আগামী ৪ বছরের মধ্যে সিলেটে অনেক বেশি উন্নয়ন হবে। নগরীর স্বার্থে শুধু আমি কেন, অন্যান্য যারা আরও দায়িত্ববান ও রাজনীতিবিদরা আছেন সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. মখলিছুর রহমান কামরান, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমদ, দেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মিসবাউর রহমান প্রমুখ।