পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ দিতে বলেন ট্রাম্প
পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার মামলায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার অন্যতম প্রধান সাক্ষী ও তার সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন।
সোমবার নিউ ইয়র্কের কোর্টে জুরিদের বলেছেন, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে পর্ন স্টারকে অর্থ দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন। ২০১৬ সালের প্রচারে এই যৌন কেলেঙ্কারির প্রভাব যাতে না পড়ে, তাই ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে কোহেন জানিয়েছেন।
কোহেন বলেছেন, ‘স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে এক লাখ ৩০ হাজার পাউন্ড দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার বিষয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, “জাস্ট ডু ইট”।’ ট্রাম্প অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কোহেন ২০১৭ পর্যন্ত ট্রাম্পের একটি কোম্পানির কর্মী ও আইনজীবী ছিলেন। সোমবার সাক্ষ্য দেয়ার সময় কোহেন বলেছেন, ট্রাম্পের সংস্থায় কাজ করার সময় তিনি ‘ফিক্সার’ (দালাল) হিসাবেই কাজ করেছেন।
কোহেনের বক্তব্য, ‘স্টর্মি ড্যানিয়েলস ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আনার পরিকল্পনা করছেন শুনেই ট্রাম্প ভয়ংকর রেগে যান। তিনি আমাকে বলেন, এটা বিপর্যয়কর ঘটনা হবে। মেয়েরা আমাকে ঘৃণা করবে। প্রচারে তার প্রভাব পড়বে।’
কোহেন বলেন, ‘তিনি শুনেছিলেন, একটা অডিও রেকর্ডিং সামনে আসার পর ড্যানিয়েলস ওই ঘটনাটা সামনে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্প তখন তাকে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার পর প্রচুর নারী তার কাছে আসছেন’।
কোহেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ট্রাম্পের হয়ে আগে মিথ্যা বলেছিলেন? কোহেন বলেন, ‘আমি কাজটা করার জন্য মিথ্যা বলেছি। আমার কাজ ছিল, বিসনেস পার্টনারদের সঙ্গে বিল নিয়ে আলোচনা করা, মানুষকে মামলা করার হুমকি দেয়া এবং ট্রাম্পের নামে যাতে ইতিবাচক খবর আসে তা নিশ্চিত করা।’
কোহেনের দাবি, ট্রাম্পের নিজস্ব কোনো ই-মেল আইডি ছিল না। তিনি মনে করতেন, ই- মেলে কী লেখা হলো, তার ভিত্তিতে মামলা হতে পারে। তিনি বলেছিলেন, কাগজে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে তার বিচার হতে পারে।
কোহেন জানিয়েছেন, ‘ড্যানিয়েলসকে অর্থ দিয়ে তার মুখ বন্ধ রাখার বিষয়টি ট্রাম্প অনুমোদন করেন। খবরের কাগজেও যাতে ড্যানিয়েলস ও অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কোনো খবর যাতে বন্ধ করা যায়, তার জন্য সচেষ্ট হন।’
কোহেনকে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে মিথ্যা বলার জন্য এবং অর্থনৈতিক অপরাধ করার দায়ে ১৩ মাস জেল খাটতে হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিউ ইয়র্কে ফৌজদারি মামলা ছাড়াও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলা চলছে। এর ফলে বাইডেনের বিরুদ্ধে তার প্রার্থী হওয়া নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি বেআইনিভাবে গোপনীয় নথিপত্র নিজের কাছে রেখেছিলেন। ট্রাম্প যাতে পদে থাকতে পারেন, তার জন্য জালিয়াতি করার অভিযোগে তার ১৮ জন সহযোগী অ্যারিজোনায় অভিযুক্ত হয়েছেন।