খারকিভের কাছে সীমান্ত শহরে সেনা ঢুকে পড়েছে, দাবি রাশিয়ার

রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। আর সেই অভিযানের মধ্যেই ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত শহর ভোভচানস্কে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা।
তবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা শহরের উত্তর উপকণ্ঠ থেকে ‘শত্রুকে পেছনে হটিয়ে দিয়েছে’। এমনকি বেশ কয়েকটি এলাকায় ইউক্রেনের সেনারা ‘কৌশলগত সাফল্য’ পেয়েছে বলেও দাবি করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।
সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এই স্থল হামলায় রাশিয়ার সেনাবাহিনী এই অঞ্চলের অন্তত নয়টি গ্রাম এবং বসতি দখল করে নেয়। এর ফলে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ খারকিভের দিকে পালিয়ে গেছেন।
এছাড়া শহরটি রাশিয়ান সেনাদের আর্টিলারি-রেঞ্জের মধ্যে চলে আসলে কী হতে পারে তা নিয়ে ইউক্রেনীয় কমান্ডারদের মধ্যেও উদ্বেগ রয়েছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, রাশিয়া তার সর্বশেষ আক্রমণে ‘ব্যাপক সংখ্যক সেনা’ মোতায়েন করেছে – যা পাঁচটি ব্যাটালিয়ন পর্যন্ত হতে পারে – এবং স্বীকার করেছে, মস্কোর সেনারা কিছু ‘কৌশলগত সাফল্যও’ পেয়েছে।
তবে সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বলেছে, দিনের শুরু থেকে রাশিয়া শতাধিক সেনা হারিয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী তার পুরোনো অবস্থান পুনরুদ্ধার করছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বলেছে, ১২টি এলাকায় লড়াই চলছে এবং ভোচানস্কের পশ্চিমে স্টারিতসার বসতিতেও এই লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে তারা বলেছিল, ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে রিজার্ভ বাহিনীকে খারকিভ অঞ্চলে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
আলাদাভাবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার সন্ধ্যার ভাষণে ঘোষণা করেছেন, একজন নতুন কমান্ডার খারকিভের বাহিনীর দায়িত্ব নিয়েছেন। অবশ্য তিনি বলেননি ঠিক কখন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইখাইলো দ্রাপতি তার পূর্বসূরি ইউরি হালুশকিনের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, খারকিভ থেকে ৭৪কিমি (৪৫ মাইল) দূরে অবস্থিত ভোভচানস্ক শহরটিতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ভারী বোমা হামলা হয়েছে এবং আশপাশের অঞ্চলের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া এখন গ্লাইড বোমা দিয়ে শহরের বসতিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে।
যদিও এটি এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য শহর তবে তারপরও ভোভচানস্কের নির্দিষ্ট কোনও সামরিক গুরুত্ব নেই। তবে এটি রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া ইউক্রেনীয়দের মনোবলের ওপর বেশ জোরালো আঘাত হবে।
খারকিভের আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনিয়েহুবভ বলেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন দিকে ছোট দলে আক্রমণ করে যুদ্ধের ফ্রন্ট লাইন প্রসারিত করার চেষ্টা করছে। তিনি স্থানীয় টিভিকে বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ান সৈন্যদের আটকে রেখেছে। কিন্তু তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ নতুন এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
টেলিগ্রামে তিনি রাশিয়ার অগ্রগতি অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতিটিকে ‘বেশ জটিল’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। প্রায় ৬ হাজার মানুষকে ইতোমধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মর্টার বা আর্টিলারির গোলা ৩০টি বসতিতে আঘাত হেনেছে।