আমেঠীতে কংগ্রেস পার্টি অফিসে হামলা, একাধিক গাড়ি ভাঙচুর
ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। ইতোমধ্যেই প্রথম দুই দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফা ভোটের আগে উত্তরপ্রদেশের আমেঠিতে হামলা হয়েছে কংগ্রেস অফিসে।
হামলার পাশাপাশি সেখানে বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর করা হয়েছে। ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের এই আসন থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও দলটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা রাহুল গান্ধী।
তবে এবার তিনি অন্য আসন থেকে নির্বাচনে লড়ছেন। সোমবার (৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার মধ্যরাতে উত্তরপ্রদেশের আমেঠিতে কংগ্রেস পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা। হামলার সময় দুর্বৃত্তরা বাইরে পার্ক করা বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর করে এবং হট্টগোল সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় কংগ্রেসের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং তারা রাতেই উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভে নামেন। ঘটনার পরই পার্টি অফিসে ছুটে আসেন কংগ্রেস জেলা সভাপতি প্রদীপ সিঙ্গল।
সিও সিটি মায়াঙ্ক দ্বিবেদীসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারী দলীয় কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। সিও সিটি দ্বিবেদী আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বিজেপির দুর্বৃত্তরা উত্তরপ্রদেশের এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যুব কংগ্রেস নেতা শুভম সিংকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই এই ঘটনায় দুই বিজেপি নেতাসহ আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
মধ্যরাতের এই ঘটনার পর পার্টি অফিসে পৌঁছান কংগ্রেসের জেলা সভাপতি প্রদীপ সিঙ্গল। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ বাহিনী। পার্টি অফিসের বাইরেই হাঙ্গামা শুরু করেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পৌঁছান সিও মায়াঙ্ক দ্বিবেদীও। ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দেওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা হয়।
গোটা ঘটনার জন্য কংগ্রেস স্মৃতি ইরানিকে দায়ী করেছে। এক্স হ্যান্ডেলে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আমেঠির বিজেপি প্রার্থীকে অভিযুক্ত করে পোস্ট করা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে, ‘স্মৃতি ইরানি এবং বিজেপি কর্মীরা আমেঠিতে ভয় পেয়ে গেছে। পরাজয়ের ভয়ে বিজেপির দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড নিয়ে কংগ্রেসের পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে। অফিসের বাইরে রাখা গাড়িও ভাঙচুর করেছে তারা। আমেঠির মানুষ এবং কংগ্রেসের কর্মীদের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা হয়েছে। অনেকেই এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। জঘন্য হামলা চালানো হয়েছে।’
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও ফুটেজও শেয়ার করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘ঘটনার সময় সাধারণ মানুষের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোটা ঘটনায় পুলিশ নির্বাক। এই হামলা প্রমাণ করছে আমেঠিতে বিজেপি হারছে।’
কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতেও এই ঘটনার ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন। তারও অভিযোগ, এই হামলার সময় পুলিশ নিশ্চুপ ছিল। কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তিনি বলেন, ‘বিজেপি কর্মীরা যখন এই তাণ্ডব চালাচ্ছে তখন পুলিশ নির্বাক দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।’
উল্লেখ্য, আমেঠি এবং রায়বরেলি আসন দু’টিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা নিয়ে দীর্ঘদিন গোপনীয়তা বজায় রেখেছিল কংগ্রেস। এবার আর রাহুল গান্ধী নন, কংগ্রেসের হয়ে আমেঠি আসনে লড়ছেন গান্ধী পরিবারের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ কিশোরী লাল সিং।
আর আমেঠির বদলে এবার রায়বরেলিতে লড়ছেন রাহুল গান্ধী।