এপ্রিলে পাকিস্তানে ঝড়-বৃষ্টিতে ১৪৩ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে এপ্রিল মাসে প্রবল বর্ষণ, বজ্রপাত, হড়কা বান, ভূমিধস ও বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে অন্তত ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি এবং লাখ লাখ একর জমির ফসল।
পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের মুখপাত্র জহির আহমেদ বাবর এএফপিকে বলেছেন, অন্যান্য বছর এপ্রিল মাসে পাকিস্তানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, চলতি বছর তার তুলনায় ১৬৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা বেশ অস্বাভাবিক। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘আবহাওয়ার এই খেয়ালী আচরণের প্রধান কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।’
এপ্রিলের বর্ষণে পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিহত ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে। প্রদেশটির প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, অতিবর্ষণ, হড়কা বান, ভূমিধস ও বজ্রপাতে খাইবার পাখতুনখোয়ায় এপ্রিলে নিহত হয়েছেন ৮৩ জন। নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন শিশু। এছাড়া প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় ৩ হাজার ৫শ’রও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।
এখন পাকিস্তানে গম কাটার মৌসুম চলছে। অতিবর্ষণের কারণে একদিকে যেমন জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, অন্যদিকে ক্ষেতের কাজ করতে গিয়ে পাঞ্জাব প্রদেশে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন অনেকে। প্রাদেশিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে পাঞ্জাবে নিহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন।
একই সময়ে বেলুচিস্তান প্রদেশেও নিহত হয়েছেন একই সংখ্যক মানুষ। এছাড়া আজাদ কাশ্মির এবং গিলগিট-বাল্টিস্তানে বর্ষণ ও বর্ষণ সম্পর্কিন নানা দুর্যোগে নিহত হয়েছেন ১৪ জন। এছাড়া বর্ষণের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সিন্ধ প্রদেশে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪ জন।
পাকিস্তানের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মরিয়ম শাব্বির আব্বাসি এএফপিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পাকিস্তানে সাধারণত বর্ষাকাল শুরু হয় জুন মাস থেকে; কিন্তু গত কয়েক বছরের আবহাওয়া প্যাটার্নের তথ্য যদি আমরা বিশ্লেষন করি, তাহলে দেখতে পাব যে আগেকার সময়ের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বর্ষাকাল ১ কিংবা দেড় মাস এগিয়ে এসেছে।’
‘ফলে এখন এপ্রিল থেকেই বর্ষা শুরুর আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আপাতত আমাদের উচিত হবে— পরিবর্তিত এই আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেওয়া।’
এর আগে ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় পাকিস্তানের মোট ভূখণ্ডের এক তৃতীয়াংশ ডুবে গিয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের হিসেব মতে, ওই বন্যায় প্রায় ৩ হাজার ডলারের সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল পাকিস্তানের।