নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় নিহত ১৬০
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ধারাবাহিক হামলায় ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। মধ্য নাইজেরিয়াজুড়ে অবস্থিত শহরগুলোকে লক্ষ্য করে চালানো একের পর এক আক্রমণে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
আফ্রিকার এই দেশটির এই অঞ্চলে আগে থেকেই ধর্মীয় এবং জাতিগত উত্তেজনা রয়েছে এবং এর মধ্যেই প্রাণঘাতী হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
স্থানীয় কর্মকর্তারা সোমবার বলেছেন, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর এই সপ্তাহান্তে চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৩ জনে পৌঁছেছে। প্রাথমিকভাবে হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৬ বলে জানানো হয়েছিল। সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীর সদস্যদের কখনও কখনও ‘দস্যু’ও বলা হয়ে থাকে।
বোকোসের স্থানীয় সরকারের প্রধান মনডে কাসাহ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘শনিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘাত সোমবার ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকায় ১১৩ জনের মতো নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’
কাসাহ বলেছেন, সমগ্র অঞ্চলজুড়ে কমপক্ষে ২০টি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে ‘ভালোভাবে সমন্বিত’ এসব আক্রমণ পরিচালনা করা হয় এবং এতে ৩০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন। গভর্নর কালেব মুতফওয়াংয়ের মুখপাত্র গিয়াং বেরে বলেছেন, ‘নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে চলমান হামলা রোধে সরকার সক্রিয় পদক্ষেপ নেবে।’
অবশ্য এই হামলার জন্য দায়ী কে তা বলেননি কাসাহ। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, আহতদের বোকোস, জোস এবং বারকিন লাদির হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
নাইজেরিয়ার এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জাতিগত ও ধর্মীয়ভাবে ভিন্নমতাবলম্বী জাতিগোষ্ঠী বাস করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সেখানে গোষ্ঠীগত সংঘাতে শত শত মানুষের প্রাণ গেছে।
এসব সহিংসতাকে প্রায়ই মুসলিম পশুপালক ও প্রধানত খ্রিস্টান কৃষকদের মধ্যকার জাতিগত-ধর্মীয় দ্বন্দ্ব হিসেবে তুলে ধরা হয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষি সম্প্রসারণও এসব সংঘাতের অন্যতম কারণ।
এদিকে স্থানীয় রেড ক্রস বোকোস অঞ্চলের ১৮টি গ্রামে ১০৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। প্রাদেশিক পার্লামেন্টের সদস্য ডিকসন চোলোমের মতে, বারকিন লাদি এলাকার কয়েকটি গ্রামে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
তিনি এসব হামলার নিন্দা করেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। চোলোম বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর এই বণিকদের কৌশলের কাছে নতি স্বীকার করব না। আমরা ন্যায়বিচার এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য আমাদের কাজে ঐক্যবদ্ধ থাকব।’