লঙ্কানদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্বপ্ন ভেঙে সেমির দৌড়ে নিউজিল্যান্ড
বল হাতে শ্রীলঙ্কাকে গুড়িয়ে দেয়ার পর ব্যাটিংয়েও কড়া শাসন অব্যাহত রেখে বড় জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। বেঙ্গালুরুতে লঙ্কানদের দেয়া ১৭২ রানের লক্ষ্যে পৌঁছাতে কিউইরা সময় নেয় মাত্র ২৩.২ ওভার। টানা চার জয়ের পর টানা চার ম্যাচ হারা নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের লিগ পর্ব শেষ করল ৫ উইকেটের এই জয় দিয়ে।
সেমিফাইনালের বাকি থাকা একটি আসন নিজেদের করার জন্য নেট রান রেটেও বেশ এগিয়ে গেল কিউইরা। প্রতিযোগিতায় থাকা পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবধান ০.৭০৭। এ অবস্থায় সেমিতে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত বলা যায় নিউজিল্যান্ডের। রান তাড়ায় নেমেই উদ্বোধনী জুটিতে ৮৬ রান তোলেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। ৪২ বলে ৯ চারে ৪৫ রান করে ফেরেন কনওয়ে। তার দুই রান পরেই ফিরে যান রাচিন। মাত্র ৩৪ বলে তিনটি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ৪২ রান করেন তিনি।
বনে যান অভিষেক আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। পেছনে ফেলেন ২০১৯ আসরে রেকর্ড গড়া জনি বেয়ারস্টোকে। তৃতীয় উইকেটে ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন কেন উইলিয়ামসন। ফেরার আগে তার ব্যাটে আসে ১৪ রান। রানের গতি সচল রাখার প্রয়াসে এরপর আরো দুটি উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ৩১ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ঝড়ো ৪৩ রান করেন ড্যারিল মিচেল। ১০ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন গ্লেন ফিলিপস। ম্যাথিউস দুটি উইকেট পান।
বৃষ্টি শঙ্কা মাথায় রেখে এম চিন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কিউইরা। নতুন বলে দারুণ শুরু করেন তাদের পেসাররা। তাতে নেতৃত্ব দেন ট্রেন্ট বোল্ট। ইনিংসে পঞ্চম ওভারে চার বলের মধ্যে কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ফিরিয়ে দিয়ে স্পর্শ করেন দারুণ এক মাইলফলক। নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬০০ উইকেট পূর্ণ করেন। তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩৪ বছর বয়সী পেসারের উইকেট এখন ৬০১টি। যার মধ্যে টেস্টে ৩১৭, ওয়ানডেতে ২১০ ও টি২০তে শিকার ৭৪টি। টিম সাউদি (৭৩২) ও ড্যানিয়েল ভেটোরির (৭০৫) পরেই তার অবস্থান। বিশ্বকাপে উইকেট শিকারের ফিফটিও করেছেন আজকের ম্যাচসেরা ট্রেন্ট বোল্ট। নিউজিল্যান্ডের প্রথম আর সব মিলিয়ে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে এ কীর্তি গড়েন তিনি।
কিউই বোলারদের সামনে ১২৮ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল লঙ্কানরা। মাহিশ থিকশানা ও দিলশান মাদুশঙ্কার ৪৩ রানের শেষ জুটির নৈপুণ্যে পুঁজিটাকে ১৭১ পর্যন্ত নিয়ে যায় তারা। শূন্য রানে জীবন পাওয়ার পর ২৮ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন কুশল পেরেরা। ফিফটি করতে খরচ করেন ২২ বল। তাতে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েন তিনি।
৯১ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন থিকশানা। বিশ্বকাপে নয় নম্বর বা তার নিচে নামাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বল খেলেন থিকশানা। দশম উইকেট জুটিতে থিকশানা ও মাদুশঙ্কা খেলেন ৮৭ বল। যা বিশ্বকাপে দশম উইকেটে বেশি বল খেলার রেকর্ড। বিশ্বকাপে লঙ্কানদের দশম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়েন এ দুজন। ৪৮ বলে ১৯ রান করে মাদুশঙ্কার বিদায়ে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস। বোল্টের ৩ উইকেটের পর দুটি করে উইকেট শিকার করেন রাচিন, স্যান্টনার ও ফার্গুসন।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ডেভন কনওয়ে, রাচিন রবীন্দ্র, ড্যারিল মিচেল, টম লাথাম, গ্লেন ফিলিপস,মার্ক চ্যাপম্যান, লকি ফার্গুসন, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা,ধনঞ্জায়া ডি সিলভা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, মাহেশ থিকশানা, চামিক করুণারত্নে, দুশ্মন্ত চামিরা, দিলশান মাদুশঙ্কা।