‘নতুন কারিকুলাম মানি না’ ৮ দফা দাবিতে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন
নতুন শিক্ষা কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাতিল, নম্বরভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু এবং শিক্ষার্থীদের দলগত কাজে ডিভাইসমুখী হতে নিরুৎসাহিত করাসহ ৮ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ঐতিহ্যগত শিক্ষা কাঠামো থেকে সরে এসে শিক্ষার্থীদের বাসায় রান্না শেখা, তথ্য অনুসন্ধানের নামে ইউটিউব নির্ভর হওয়া, নাচ-গান, নবান্ন উৎসব, পিঠা তৈরি, সাজসজ্জাসহ অপ্রয়োজনীয় অনেক বিষয়কে শিক্ষাক্রমভুক্ত করা হয়েছে।
মানববন্ধনে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক রাখাল রাহা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির আহমেদসহ প্রায় শতাধিক অভিভাবক যোগ দেন।
এসময় নতুন কারিকুলাম বন্ধের দাবি জানিয়ে রাখাল রাহা বলেন, একটি কারিকুলাম প্রণয়নে বিভিন্ন মহলে আলোচনা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী কি না সেটি ভাবার প্রয়োজন ছিল। সংসদে ও মন্ত্রিপরিষদে এ কারিকুলামে আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এসব হয়েছে কি না আমরা জানি না। যদি হতো তাহলে এমন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হতো না। আমাদের আহ্বান থাকবে অবিলম্বে আমাদের শিক্ষার্থী ও জাতি ধ্বংসের এই কারিকুলামের প্রকল্প বন্ধ করুন। দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে এ কারিকুলাম বন্ধ করার বিকল্প নেই।
সমাবেশে অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষার্থীদের দলগত কাজে ডিভাইসমুখী হতে অনুৎসাহিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের অধ্যায়নমুখী করতে হবে। যে ইন্ডিকেটর দিয়ে বাচ্চাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে, সেটি তো প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রযোজ্য। যারা পড়তে জানে না, সংখ্যা চেনে না… তাদের এসব ইন্ডিকেটর শেখাতে হয়। কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের এসব শিখিয়ে তাদের প্রতিবন্ধী করা হচ্ছে।
তারা বলেন, নতুন এ কারিকুলামে আমাদের ব্যয়ও বাড়ছে। আমরা এত ব্যায় কুলিয়ে উঠতে পারছি না। প্রতিদিন কাগজ, কলম ও পেন্সিলের পাশাপাশি এখন নতুন নতুন সরঞ্জাম যুক্ত করা হচ্ছে। শিক্ষা ব্যয়ের দিকেও রাষ্ট্রকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
ফেসবুক ভিত্তিক এ গ্রুপের দাবিগুলো হলো-
১. ‘শিক্ষানীতি বিরোধী’ নতুন কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।
২. নম্বরভিত্তিক দুটি সাময়িক লিখিত পরীক্ষা (৬০ নম্বর) চালু রাখতে হবে এবং ধারাবাহিক মূল্যায়ন হিসেবে ৪০ নম্বর রাখতে হবে।
৩. নবম শ্রেণি থেকেই শিক্ষার্থীর আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ অথবা বিজ্ঞান বিভাগ রাখতে হবে।
৪. ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ ইত্যাদি নির্দেশক বা ইন্ডিকেটর বাতিল করে নম্বর ও গ্রেডভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি রাখতে হবে।
৫. সবসময় সব শিখন, প্রোজেক্ট ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ক্লাসের ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে এবং স্কুল পিরিয়ডেই সব প্রোজেক্ট সম্পন্ন হতে হবে।
৬. শিক্ষার্থীদের দলগত ও প্রোজেক্টের কাজে ডিভাইসমুখী হতে অনুৎসাহিত করতে হবে এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে অধ্যয়নমুখী করতে হবে।
৭. প্রতিবছর প্রতি ক্লাসে নিবন্ধন ও সনদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা চালু রাখতে হবে এবং এসএসসি ও এইচএসসি দুটি পাবলিক পরীক্ষা বহাল রাখতে হবে।
৮. সবসময় সব শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই তা মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদে উত্থাপন করতে হবে।





