‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করুন’
জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সিলেট মহানগর এর প্রধান উপদেষ্টা হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান এলএল.বি বলেছেন, শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর। আদর্শ সমাজ, আদর্শ প্রজন্ম গড়তে শিক্ষকদের ভূমিকা অতুলনীয় অথচ শিক্ষকরাই আজ অবহেলিত। সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার মাঝে বৈষম্য বজায় রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বৈষম্য দূর করতে হলে সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা সময়ের দাবী।
শনিবার (৫ আগস্ট) শনিবার বাদ আসর নগরীর কোর্ট পয়েন্টে দেশব্যাপী জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচির অংশ হিসেবে “স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ এবং মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখার দাবীতে আয়োজিত মানববন্ধনে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সিলেট মহানগর শাখার আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
মহানগর সভাপতি মাওলানা আব্দুশ শহীদ এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী প্রভাষক মো: বোরহান উদ্দিন এর পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক ফোরাম এর দায়িত্বশীল সহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকবৃন্দ
জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সিলেট মহানগর শাখার উপদেষ্টা মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম শুধু মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ চায় তাই নয় বরং মাদরাসা শিক্ষা ধারায় ইবতেদায়ী থেকে কামিল পর্যন্ত এবং জেনারেল শিক্ষা ধারায় মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ চায়। এ লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।
ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি আব্দূশ শহীদ বলেন, ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো আজ চরমভাবে অবহেলিত। মাদ্রাসাগুলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সরকারের অভ্যন্তরে থাকা একটি মহলের অনীহার কারণে ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন বৈষ্যম্যের শিকার। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০, ইবতেদায়ী মাদরাসা নীতিমালা-২০১৮,ক্ষমতাসীন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮, বাংলাদেশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনএর নির্দেশনা এসব কোনো কিছুই ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষার ভাগ্য বদলাতে পারেনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৮৯৫৬টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা থাকলেও নানা শর্তের বেড়াজালে পতিত হয়ে মাত্র ১৫১৯ টি মাদ্রাসা সরকারি অনুদান প্রাপ্ত হয়েছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরেও প্রায় ৯ হাজার প্রতিষ্ঠানে ৪৫ হাজার শিক্ষক কর্মচারী বিনা বেতনে পাঠদান করছে অথচ তাদেরকে কোন বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। কাদের ইশারায় আজকে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আজকের এই মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দেশের সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ বেসরকারি এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে কমপক্ষে ৩০ হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। বক্তারা আরও বলেন, সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরত পাঠিয়েছে। আমরা দ্রুত এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
এর পাশাপাশি ধর্মী শিক্ষা গ্রহণ এদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। শুধু তাই নয়, মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখতে আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা সিলেবাসে অযাচিত, অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখতে ইসলামী স্কলারদের সহায়তায় ইসলামী আদর্শ নির্ভর শিক্ষা সিলেবাস অক্ষুন্ন রাখতে হবে।





