হবিগঞ্জে বিকাশের দোকানে চুরি, চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পৌর শহরের বাল্লা রোডে অবস্থিত হাজী চেরাগ আলী মার্কেটের ইসলাম ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরের আজিজুল হকের দোকানের থালা ভেঙ্গে দোকান থেকে সংঘবদ্ধভাবে চোর চক্রের টাকা চুরির অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শায়েস্তাগঞ্জ, ওলিপুর ও হবিগঞ্জ সদর সহ বিভিন্ন স্থানে রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার ১১৯ নং আসাদগঞ্জের বিভাগীয় চোর চক্রের গডফাদার মো: রফিক মিয়ার পুত্র মো: ফারজাত হোসেন প্রকাশ সজীব (৪৩), কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা উপজেলার বাংগুড়া গ্রামের বাঙ্গরা (গ্রামীন ব্যাংক সংলগ্ন জনৈক হানিফ সরকারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া হারুন অর রশিদের পুত্র মোঃ হানিফ ওরফে টুন্ডা হানিফ (৪৩), একই জেলার মুরাদনগর উপজেলার সোনাকান্দা গ্রামের বর্তমান চট্টগ্রাম জেলার পশ্চিম বাকলিয়া থানার বৌ-বাজার খেজুরতলী এলাকার বাসিন্দা আব্দুস ছাত্তার মিয়ার পুত্র মোঃ জামাল মিয়া (৩৯), কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার শুশুন্ডা ভুবনঘরের ইদ্রিস কবরস্থান সংলগ্ন) বেড়ি বাধের বাসিন্দা মৃত গোলাম মোস্তফা ওরফে আবুল হাশেমের পুত্র মো: তৌহিদ ওরফে তৌফিক (২৫), বি- বাড়ীয়া জেলার সরাইল উপজেলার সাজদাপুর গ্রামের বাসিন্দা সজিব চন্দ্র সরকারের ছেলে হৃদয় চন্দ্র সরকার(১৯)। এর আগে ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী বিকাশের দোকানদার আজিজুল হক এ ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিন ১৪ এপ্রিল দোকানীর মৌখিক অভিযোগের বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। দোকানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, বিকাশের দোকানের থালা ভেঙে ওই চোর চক্রের একজন ক্যাশ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। পরে ওই চক্রের বাকী চারজনও চলে যায়। পরে থানা পুলিশের একাধিক টিম হবিগঞ্জ সহ বিভিন্ন জেলায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান চালায়। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৮ এপ্রিল চুনারুঘাট থানার ওসি মোঃ রাশেদুল হকের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর তদন্ত গোলাম মোস্তফা ও এসআই ফজলে রাব্বিসহ একদল পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে প্রথমে চক্রের মুলহোতা মো: ফারজাত হোসেন প্রকাশ সজীবকে আটক করেন। পরে থাকে সঙ্গে নিয়ে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাকী চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করে জানায়, তারা পরষ্পরের যোগসাজসে শুধু চুনারুঘাটে নয়, একইভাবে বিভিন্ন জেলায় বিকাশ দোকানের মোবাইল ব্যবহার করে সেন্ড মানি করে কিংবা ক্যাশ থেকে টাকা লুটে নেয় এই চক্রের সদস্যরা। এসময় তাদের কাছ থেকে চোরাইকৃত নগদ ৯০ হাজার টাকা, ১ টি কাটার মেশিন, বিভিন্ন মডেলের ৭ টি পুরোনো মোবাইল, ১ টি ক্যামেরা, ১ টি কাল ব্যাগ ও ৩ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন অপারেটরের মোবাইল রিচার্জ কার্ড উদ্ধার করেন । তারা সবাই বিভাগীয় চোর চক্রের সদস্য। এর মধ্যে মো: ফারজাত হোসেন প্রকাশ সজীবের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় – চুরি, ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র, মাদকসহ ১২ টি মামলা। তার সহযোগী হানিফের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্রসহ ৩ টি মামলা জামাল মিয়ার বিরুদ্ধে ১ টি মাদক মামলা, তৌহিদ ওরফে তৌফিকের বিরুদ্ধে ২ টি মামলা রয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ওসি মোঃ রাশেদুল হক জানান, এ চক্রটি আন্ত: বিভাগীয় চোরচক্রের সদস্য, তারা বিকাশ দোকানগুলোকে টার্গেট করে ভিড় জমায় এবং নানা কৌশলে দোকানের থালা ভেঙে ক্যাশ থেকে টাকা লুট করে নেয়। গত ১৪ এপ্রিল বিকেল অনুমান ৫ টা ৫০ মিনিটে চুনারুঘাটের পৗর শহরের বাল্লা রোডে অবস্থিত হাজী চেরাগ আলী মার্কেটের ইসলাম ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরের আজিজুল হকের দোকানের থালা ভেঙ্গে ৪লাখ ৮০ হাজার টাকা সহ ডাচ বাংলা, নগদ ও বিকাশের ব্যবসায় ব্যাবহৃত ৮ হাজার টাকা মূলবানের একটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে পালিয়ে যায় চোর চক্রটি। এপর্যন্ত ৫ জন চোরকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। অবশিষ্ট চোরাই টাকা এবং মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।