পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ কী?
পায়ের গোড়ালির ব্যথা এখন কমন রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে হাঁটাচলার সময় প্রায়ই ব্যথা অনুভব করেন। এ নিয়ে ভোগান্তির অন্ত নেই। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ সম্পর্কে জানব।
নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে গোড়ালি ব্যথা নিয়ে কথা বলেছেন মার্কস মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে অর্থোপেডিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মারুফ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
আমরা অনেক সময় দেখি, হুট করে কারও হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে কিংবা চলাফেরার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। অনেকেই যেটি বারবার বলে থাকেন হুট করেই তাঁর গোড়ালির ব্যথা শুরু হয়েছে এবং অনেকের দীর্ঘদিন ধরেও এই ব্যথা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার কাছ থেকে জেনে নিতে চাই, এই যে গোড়ালি ব্যথার কথা বলছি, সেটি প্রাথমিক পর্যায়ে কীভাবে শুরু হয়ে থাকে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ফিমেলদের বেশি হয়ে থাকে। সেটার একটি কারণ হচ্ছে, যাঁরা একটু ভারী বা মোটা, তাঁদের আমরা পেয়ে থাকি এবং এর সাথে যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, কিছু কো-মরবিডিটি বা অন্য কোনও রোগ আছে, তাঁদের এই রোগটি বেশি হয়ে থাকে। অথবা লং টাইম ধরে যাঁরা শক্ত সোলের জুতা পরছেন, যাঁরা হিল পরছেন, বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিতে মহিলারা হিল পরে আপনি জানেন। তো সে ক্ষেত্রে তাঁদের গোড়ালিতে ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে আস্তে আস্তে।
ডা. আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, এই ব্যথার মেইন কারণ বা মেইন প্যাথোফিজিওলজি, সেটা হচ্ছে লং টাইম যাঁরা ওয়েট ক্যারি করে, মানে ওবেস বা ভারী; এর পাশাপাশি শক্ত জুতা পরছে অথবা হাই হিল পরছে অথবা এমন কোনও সারফেসে কাজকর্ম করতে হয়, যেটা অনেক ডিজকমফোর্ট তাঁর জন্য। এটা হলে কী হয়, একটা সময় তাঁর; আমরা জানি যে পায়ের গোড়ালির ওখানে ক্যালকেনিয়াম বা হাড় আছে। অনেক সময় এক্সরেতে আমরা দেখি হাড়ের মাথায় এক্সট্রা হাড় বেড়ে যাচ্ছে। ওই এক্সট্রা হাড় না বাড়লেও প্লান্ডার ফাসা; প্লান্ডার ফাসা বলতে আমাদের ওখানে কিছু রগ আছে পায়ের তলাতে। রগগুলোর উপরে, রগের গোড়া যেটা, সেখানে কন্টিনিউয়াস প্রেশার পড়ে। আস্তে আস্তে ওখানে ইনফ্লামেশন হয়ে গোড়ালি ব্যথাটা শুরু হয়ে থাকে।
তাঁর আসলে কী কী ডিজকমফোর্ট থাকে প্রাথমিক পর্যায়ে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে পেশেন্টরা আমাদের কাছে এসে বলে থাকে, আমি সকালে আসলে ঘুম থেকে উঠলে, মানে মর্নিংয়ে যখন সে ঘুম থেকে ওঠে, ওঠার পরে যখন ফ্লোরে সে পা রাখে, তখন মনে হয় পায়ে ভর দিতে পারছে না। প্রচণ্ড ব্যথা। পায়ে ভর দেওয়া যাচ্ছে না। ওয়াশরুমে যেতে পারছে না এবং মনে হয় সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সে হাঁটছে। এই ডিজকমফোর্ট রোগীদের জন্য সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা।