একাত্তরের ভয়াবহ এক দিন ছিল ৫ এপ্রিল। সিলেটে এদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থান ছিল ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোডের আশপাশের উঁচু টিলায়। আর পাল্টা প্রতিরোধ গড়তে মুক্তিযোদ্ধারা জড়ো হয়েছিলেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের টিলায়। একসময় দুইপক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় গুলি বিনিময়। দীর্ঘক্ষণ চলে তুমুল যুদ্ধ। কিন্তু অস্ত্র ও প্রয়োজনীয় গোলাবারুদের অভাবে মুক্তিযোদ্ধারা এক পর্যায়ে পিছু হটতে বাধ্য হন। তারা ফিরে আসেন রায়নগর-শিবগঞ্জ এলাকার দিকে। শান্ত হয়ে আসে পরিস্থিতি।
কিন্তু প্রতিশোধ স্পৃহায় সুসজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনী অগ্রসর হয় সামনের দিকে। খুঁজতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের। একসময় চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে আবহাওয়া অফিসের টিলা। অফিসে কর্মকর্তারা তখন যার যার দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের সবাইকে বের করে নিয়ে আসে অফিসের সামনে। সারি বেঁধে দাঁড় করায় এক লাইনে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক সাথে গর্জে উঠে নরঘাতকদের বন্দুকের নল। ঘাতকদের বুলেটে একে একে শহিদ হন ৯ জন নিরীহ বাঙালি।
১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল পাকবাহিনীর নৃশংস বর্বরতায় যারা শহিদ হয়েছিলেন তারা হলেন, আব্দুস সবুর খোন্দকার (এস.ও), আমিনুল হক (এস.ও), আনোয়ার হোসেন (পর্যবেক্ষক), আবু তাহের (পর্যবেক্ষক), জামাল হোসেন (মেকানিক, গ্রেড-১), মমতাজ উদ্দিন (বি.এম), আকলিম উদ্দিন (পিয়ন), রেনু মিয়া (উ.নৈ.চৌ) ও আকদ্দছ আলী (বাবুর্চি)।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন এবং বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য খেলাঘর সিলেট জেলা কমিটি আগামীকাল বুধবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। এতে সকলের যথাসময়ে উপস্থিতি কামনা করা হয়েছে।