সাকিবের ঘূর্নিতে বাংলাদেশের বড় জয়
শুরুটা করেছিলেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। টসের পর নেমে আসা ঝড় তারা টেনে এনেছিলেন ইনিংসের শুরুতে। পরে সাকিব আল হাসান-তাওহিদ হৃদয়রা শেষটা করেছিলেন ঠিকঠাক। আইরিশদের ইনিংসের শুরুতে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। বাকিটা সাকিব ‘ম্যাজিকের’। একাই লড়াই করা কার্টিস ক্যাম্পার কমিয়েছেন কেবল হারের ব্যবধান।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে আয়ারল্যান্ডকে ৭৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে ১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০২ রানের সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সবচেয়ে বড় জয় ২০২১ বিশ্বকাপে পাপুয়ানিউগিনির বিপক্ষে, ৮৪ রানে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে কোনো বাউন্ডারির দেখা পায়নি বাংলাদেশ। এরপরই ঝড় শুরু করেন রনি তালুকদার ও লিটন দাস। কেবল ২১ বলেই দল দেখা পায় হাফ সেঞ্চুরির। এটিই দ্রুততম দলীয় পঞ্চাশ। এর আগে ২০১৬ সালের বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪ বলে ৫০ করেছিল বাংলাদেশ।
রেকর্ড গড়েন লিটন দাসও। কেবল ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। ভেঙে দেন ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুলের গড়া ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড। এই ব্যাটারের সামনে সুযোগ ছিল অনায়াসে সেঞ্চুরি করারও। কিন্তু ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ বলে ৮৩ রান করে আউট হয়ে যান তিনি।
বেন হোয়াইটের অনেক বাইরের বল কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার আগেই অবশ্য রনি তালুকদারের সঙ্গে ১২৪ রানের উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড গড়েছেন আরও একটি। উদ্বোধনে তাদের এই রানই এখন সর্বোচ্চ। টি-টোয়েন্টিতে আগের সেরা জুটি ছিল ১০২ রানের। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গড়েছিলেন মোহাম্মদ নাইম শেখ ও সৌম্য সরকার।
লিটনের উদ্বোধনী সঙ্গী রনি তালুকদারও ছিলেন হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি। এই ব্যাটার ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৩ বলে ৪৪ রান করে আউট হন দলের প্রথম ব্যাটার হিসেবে। বেন হোয়াইটের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফেরার পর লিটনের সঙ্গে ১২৪ রানের জুটি ভাঙে।
দুই উদ্বোধনী ব্যাটারের পর দলকে টানেন তাওহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসান। এক বল আগেই অবশ্য তাওহিদ ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ বলে ২৪ রান করে আউট হন। তবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৪ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা বাজে হয় আয়ারল্যান্ডের। তাসকিনের করা প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরত যান পল স্টার্লিং। উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেন লিটন দাস। এরপরই শুরু হয় সাকিব আল হাসান ‘ম্যাজিক’। শুরুটা অবশ্য লরকান টাকারের সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরায়। ৫ বলে ৬ রান করেন তিনি।
এরপর ৫ বলে ৬ রান করা রস অ্যাডাইয়ারকে বোল্ড করেন সাকিব। পরে তিনি সাজঘরে ফেরান গ্যারেথ ডেলোনিকে। সাকিবের চতুর্থ শিকার হিসেবে সাজঘরে ফেরত যান জর্জ ডকরেল। ৩ বলে ২ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাকিব হয়ে যান সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। ১৩৪ উইকেট নিয়ে ছাড়িয়ে যান টিম সাউদিকে।
এরপর হেরি টেক্টরকে ফিরিয়ে নিজের ফাইফার পূরণ করেন সাকিব। বোল্ড হওয়ার আগে আইরিশ ব্যাটার ১৬ বলে করেন ২২ রান করেন। আইরিশদের পক্ষে পরের পথ অনেকটা একাই টানেন কার্টিস ক্যাম্পার। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে পুরো সফরেই প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি।
তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৩ চার ও সমান ছক্কায় ৩০ বলে ৫০ রানে আউট হন তিনি। শেষদিকে নেমে ১৭ বলে ২০ রান করেন গ্রাহাম হিউম। বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২২ রান দিয়ে ৫ উইকেট পান সাকিব। ৩ ওভারে ২৫ রান দিয়ে তাসকিন নেন ৩ উইকেট।